অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, শির্ক কেন ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ? কেন আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করেন কিন্তু শির্ক ক্ষমা করেন না? শির্ক করে তো আমরা আল্লাহর কোনো ক্ষতি করছি না। শির্ক করে তো আমরা মানুষের কোনো ক্ষতি করছি না। আমি যদি একটা তাবিজ পড়ে ভাবি এই তাবিজের কারণে আমার পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট হবে, তাতে এমন কি দোষ হল? আমি যদি পীরের মুরিদ হয়ে ভাবি পীর বাবা আমার হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করে আমার জীবনের সমস্যা দূর করে দিবে, কিয়ামতের দিন আমার জন্য আল্লাহর কাছে তদবির করবে, তাতে এমন কি মহাপাপ হল? কেন সুদ, ঘুষ, খুনের মতো বিরাট সব পাপ ক্ষমা করা যাবে কি না, তা আল্লাহ্ বিবেচনা করবেন, কিন্তু শির্ক কখনও ক্ষমা করবেন না?
আসুন বোঝার চেষ্টা করি মানুষ কেন শির্ক করে। ধরুন আপনি একটা কোম্পানিতে চাকরি করেন, যার চেয়ারম্যান খুবই ন্যায়পরায়ণ মানুষ। তিনি কাউকে কোনো ছাড় দেন না। প্রত্যেকের সাথে সমান আচরণ করেন এবং প্রত্যেকের কাজের খুঁটিনাটি হিসাব রাখেন। এখন তার অধীনে যে ডিরেকটররা আছে, তার মধ্যে একজন হচ্ছে আপনার মামা। আপনি জানেন যে আপনি যদি অফিসে একটু দেরি করে আসেন, মাঝে মধ্যে না বলে ছুটি নেন, হাজার খানেক টাকা এদিক ওদিক করে ফেলেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। যদি চেয়ারম্যানের কাছে একদিন ধরা পড়েও যান, আপনার মামা ঠিকই আপনাকে বাঁচিয়ে দিবে। হাজার হোক, মামা তো। সেজন্য মামাকে খুশি রাখার জন্য আপনি প্রতি মাসে তার বাসায় উপহার নিয়ে যান, অফিসে তাকে শুনিয়ে সবার কাছে তার নামে প্রশংসা করেন, তার বাসায় বাজার করে দিতে বললে আপনি অফিসের সব কাজ ফেলে রেখে ছুটে যান বাজারে। যেভাবেই হোক মামাকে হাতে রাখতেই হবে। মামা না থাকলে সর্বনাশ।
এই হচ্ছে শির্কের সমস্যা। মানুষ জানে যে আল্লাহ (বা অন্য ধর্মের সর্বোচ্চ সৃষ্টিকর্তা) হচ্ছেন Absolute Just – পরম বিচারক, পরম ন্যায়পরায়ণ। তিনি সব কিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করবেনই। এখন মানুষ যে প্রতিদিন আল্লাহর নিয়ম ভাঙছে, এদিক ওদিকে ফাঁকি দিচ্ছে, নিজের সুবিধার জন্য একটু ঘুষ দিচ্ছে, একটু সুদ দিচ্ছে – এগুলোর প্রত্যেকটা যদি গুণে গুণে হিসাব করা হয় এবং প্রতিটা অপকর্মের বিচার করা হয়, তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে! বেহেশত পাওয়ার কোনো আশাই থাকবে না! তাহলে কি করা যায়? দেখি আল্লাহর অধীনে কাউকে হাত করা যায় কি না। তাহলে তাকে দিয়ে কিয়ামতের দিন আল্লাহকে বলালে হয়ত আল্লাহ কিছু দোষ মাফ করে দিবেন। এই ধারণা থেকে মানুষ চেষ্টা করে কোনো কোনো এক পীর বাবার মুরিদ হবার, কোনো এক নবীর দিনরাত গুণগান করার, কোনো এক দেবতাকে সন্তুষ্ট করার, যাতে করে সেই পীর/নবী/দেবতা একদিন সৃষ্টিকর্তার কাছে তার অপকর্মের বিচার হালকা করার জন্য তদবির করতে পারে। মানুষ জানে যে সে এতো অপকর্ম করেছে যে, সে আর আল্লাহকে মুখ দেখাতে পারবে না। তাই কত ভাবে দুই নম্বরি করে পালানো যায়। সে নামায ফাঁকি দেওয়া বন্ধ করবে না, ঘুষ খাওয়া বন্ধ করবে না, অর্ধ নগ্ন হয়ে বিয়ের দাওয়াতে যাওয়া ছাড়বে না। কিন্তু ঠিকই চেষ্টা করবে কিভাবে আল্লাহর ‘কাছাকাছি’ কাউকে হাত করে বিচার থেকে পালানো যায়। কিভাবে দোষগুলো কোনোভাবে ধামাচাপা দেওয়া যায়। এভাবে মানুষ নিজেকে সংশোধন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা না করে যতসব দুই নম্বরি উপায় নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদেরকে দেখে অন্যরাও একই কাজ করা শুরু করে। শুরু হয় সমাজের এবং দেশের পতন। মাঝখান থেকে তাদের ধর্মীয় বেশভূষায় করা অপকর্মের কারণে তাদের ধর্মের ব্যাপক বদনাম হয়ে যায় এবং মানুষ সেই ধর্মের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে।
শির্কের আরেকটি বড় সমস্যা হল, যেহেতু কিছু মানুষ অন্য কিছু মানুষকে বা জড় বস্তুকে তাদের থেকে মহান, আল্লাহর ‘কাছাকাছি’ কিছু বানিয়ে ফেলে, তখন শুরু হয় সমাজে শ্রেণিভেদ এবং স্বজনপ্রীতি। সমাজে এক শ্রেণীর কিছু উত্তম, পবিত্র মানুষ বা জড় বস্তু তৈরি হয় এবং এক শ্রেণীর কিছু অধম মানুষ তৈরি হয়। সেই অধম মানুষ গুলো ওই উত্তম মানুষ এবং বস্তুগুলোকে খুশি করার জন্য এমন কিছু নেই যেটা তারা করে না এবং ওদেরকে তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে তদবির করার মাধ্যম বানিয়ে ফেলে। এই সুযোগে সমাজের কিছু শ্রেণীর মানুষ বিরাট ব্যবসা শুরু করে দেয় ওই পবিত্র মানুষ এবং বস্তুগুলোকে নিয়ে। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ হয় নানা ধরণের মূর্তি বানিয়ে এবং সেই মূর্তি গুলো নদীতে ফেলে দিয়ে। কোটি কোটি টাকার জমজমাট ব্যবসা চলছে মাজারে, পীরের দরবারগুলোতে। ওইসব মন্দির, মাজারের কর্মচারীগুলোর কোনো পড়ালেখা করার দরকার পড়ে না, জীবনে আর কোনো কাজ করার দরকার হয় না। তারা ভক্তদের টাকা দিয়ে আরামে তাদের জীবন পার করে দেয়। এভাবে সমাজে এক শ্রেণীর মানুষ তৈরি হয়, যাদের কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা দরকার হয় না, চাকরি বা ব্যবসা করতে হয় না, সমাজের উন্নতিতে কোনো অবদান রাখতে হয় না। যেখানে কি না নবী (সা) নিজে ব্যবসা করতেন সংসার চালানোর জন্য এবং ধর্ম শিখিয়ে কারো কাছ থেকে একটা টাকাও নিতেন না, সেখানে এই মানুষগুলো আরাম কেদারায় বসে ঝাড়ফুঁক করে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হয়ে যায়।
এই ‘পবিত্র’ মানুষগুলো তাদের এতো সহজ আয়ের ব্যবস্থা যে কোনো উপায়ে টিকিয়ে রাখার জন্য এমন কিছু নেই যেটা তারা করে না। এরা চেষ্টা করে সাধারণ মানুষ যেন কখনও আসল ধর্মীয় বই পড়ে সৃষ্টিকর্তার সঠিক সংজ্ঞা শিখে না ফেলে। কারণ সাধারণ মানুষ যদি তাদের সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ধর্মীয় বই নিজেরা পড়ে ফেলে, তাহলে তারা শিখে যাবে যে সৃষ্টিকর্তার কোনো প্রতিমা নেই, তার সমকক্ষ কেউ নেই, কেউ তার কাছে কারো হয়ে সুপারিশ, তদবির করতে পারে না। সৃষ্টিকর্তা নিজে প্রতিটি মানুষের কথা শোনেন, নিজে কোনো উকিল ছাড়া প্রতিটি মানুষের বিচার করবেন, এবং তিনি নিজে প্রতিটি মানুষের কাজের রেকর্ড রাখছেন এক অভাবনীয় ব্যবস্থায়। তার কোনো ‘হেল্পার’ দরকার হয় না।
তোমরা যেখানেই থাকো তিনি তোমাদের সাথে আছেন। তিনি সব দেখেন তোমরা কি কর। [৫৭:৪]
আকাশ এবং পৃথিবীর সকল গোপন ব্যাপারে তাঁর জ্ঞান রয়েছে। তিনি কতই না পরিস্কার দেখেন এবং শোনেন! তিনি ছাড়া তাদের আর কোনো রক্ষাকারী নেই। তিনি তাঁর রাজত্বে আর কাউকে অংশ দেন না। [১৮:২৬]
শির্ক শুধু ইসলামেই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ নয়, এমনকি হিন্দু এবং খ্রিস্টান ধর্মেও মহাপাপ। যেমন বাইবেলে দেখুনঃ
Thou shalt have none other gods before me. Thou shalt not make thee any graven image, or any likeness of anything that is in heaven above, or that in the earth beneath, or that is in the water beneath the earth. Thou shalt not bow down thyself unto them, nor serve them; for I the Lord thy God am a jealous God. [The Bible, Deuteronomy 5:7-9]
হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ গুলোতে দেখুনঃ
There is no image of Him. [Yajurveda 32:3]
He is bodyless and pure. [Yajurveda 40:8]
They enter darkness, those who worship the natural elements. They sink deeper in darkness, those who worship sambhuti (created things). [Yajurveda 40:9]
Those whose intelligence has been stolen by material desires surrender unto demigods and follow the particular rules and regulations of worship according to their own natures. [Bhagavad Gita 7:20]
He is One only without a second. [Chandogya Upanishad 6:2:1]
Of Him there are neither parents nor lord. [Svetasvatara Upanishad 6:9]
There is no likeness of Him. [Svetasvatara Upanishad 4:19]
His form is not to be seen; no one sees Him with the eye. [Svetasvatara Upanishad 4:20]
খ্রিস্টান এবং হিন্দু ধর্মের মূল আদি গ্রন্থগুলোতে পরিস্কার করে বলা আছে যে সৃষ্টিকর্তা এক, তার কোনো প্রতিকৃতি, কোনো প্রতিমা বানানো যাবে না, কোনো জড় বা জীবের পুজা করা যাবে না, কোনো দেবদেবী নেই। কিন্তু এই মূল আদি গ্রন্থ গুলো সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। বরং চার্চের পাদ্রি, মন্দিরের পণ্ডিত, আশ্রমের গুরুজি যা বলে, সেটাই সাধারণ মানুষ অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে যায়। একই ঘটনা ঘটে মুসলমানদের বেলায়ও। আপনি খুব বেশি হলে গড়ে দশ জন মুসলমানের মধ্যে একজন পাবেন, যে কু’রআন পুরোটা একবার হলেও বুঝে পড়েছে। বাকি সবাই হয় কিছু হাদিসের বই পড়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই মান্ধাতা আমলের “আলেমদের” লেখা জাল হাদিস ভরা বই, না হলে মসজিদের অর্ধ শিক্ষিত ইমাম, গুরুজি, পীর বাবা যা বলেছে, সেটাই গভীর ভক্তি নিয়ে মেনে নিয়েছে। স্বয়ং আল্লাহ্র পাঠানো ‘কিভাবে মুসলমান হতে হয়’ এর একমাত্র ম্যানুয়াল – কু’রআন, খুব কম মানুষকেই বুঝে পড়তে দেখা যায়। একারণে মুসলমানরাও বড় হয় হাজারো ধরণের ভুল ধারণা নিয়ে, যার কারণে তাদেরকেও এমন অনেক কাজ করতে দেখা যায় যা শির্কের মধ্যে পড়ে। যেমন পাথরের আংটি পড়ে ভাবা এই আংটির কারণে তার ব্যবসা ভালো যাবে, ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাবে; হাতে আয়াতুল কুরসি লেখা ব্রেসলেট পড়ে ভাবা সেটা তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে, গলায় তাবিজ পড়ে ভাবা উদ্দেশ্য হাসিল হবে; ঘরের দেওয়ালে সূরার ফলক টাঙিয়ে, দরজায় সূরা ঝুলিয়ে ভাবা তা খারাপ জিনিস দূরে রাখবে ইত্যাদি।
কোনো মানুষ বা বস্তুকে যে সৃষ্টিকর্তার ‘কাছে’ যাবার মাধ্যম বা সুপারিশের মাধ্যম করা যাবে না, তার জন্য কু’রআনে কঠিন নির্দেশ আছেঃ
সে দিনের ভয় কর যেদিন কোন সত্ত্বা অন্য কোন সত্ত্বার সাহায্যে এগিয়ে আসবে না এবং তার থেকে কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং তার থেকে কোনো ক্ষতিপূরণও নেওয়া হবে না এবং তাদেরকে কোনই সাহায্য করা হবে না। [বাকারাহ ২:৪৮]
কোনো পীর, গুরু কিয়ামতের দিন কোনো মুরিদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে না। সেই সুযোগই তাকে দেওয়া হবে না। সে নিজের হিসাব দিতেই ব্যস্ত থাকবেঃ
সেদিন তাদের মুখ সিল করে দেওয়া হবে, তাদের হাত আমাকে বলে দিবে, তাদের পা আমাকে সাক্ষী দিবে, তারা (দুনিয়ায়) কি করতো। [ইয়াসিন ৩৬:৬৫]
আল্লাহর কোনো পীর, গুরুর কাছ থেকে জানার কোনো দরকার নেই তাদের ভক্তরা কি করতো, কারণ তিনি নিজেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন যেন মানুষের প্রতিটি কথা, কাজ, চিন্তা রেকর্ড হয়ঃ
পৃথিবীতে এমন কোনো প্রাণী নেই যার সংস্থানের দায়িত্ব আল্লাহর উপর নেই। তিনি জানেন কে কোথায় থাকে এবং তার শেষ পরিণাম কি। সবকিছু এক পরিস্কার রেকর্ডে আছে। [হুদ ১১:৬]
তুমি যেই অবস্থাতেই থাকো, যেটুকুই কু’রআন পড়, যে কাজই তোমরা করো, আমি উপস্থিত থাকি যখনি তোমরা তা করো। একটা ধূলিকণার সমান বা তার চেয়ে ছোট বা বড় যা কিছুই পৃথিবীতে বা আকাশে যেখানেই থাকুক না কেন, তা তোমার প্রভুর অগোচরে নেই। বরং সবকিছুই লেখা আছে এক পরিস্কার রেকর্ডে। [ইউনুস ১০:৬১]
এই সব সত্য মানুষের কাছে ফাঁস হয়ে গেলে সর্বনাশ! কোটি কোটি টাকার মূর্তি এবং মন্দিরের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে, পাদ্রীর কাছে মানুষ তদবির করা বন্ধ করে দিবে, মাজারে আর কেউ মুরিদ হবে না, শেখের বয়াত নেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তখন সমাজের ওই সব ‘পবিত্র’ অর্ধ শিক্ষিত, অযোগ্য, প্রতারক মানুষগুলো এবং তাদের বিশাল সাগরেদ বাহিনী না খেয়ে মারা যাবে। তাদের আয়ের এতো সহজ ব্যবস্থা যেন কখনও বন্ধ হয়ে না যায়, সেজন্য তারা ধর্মের নামে নানা ধরণের অলৌকিক, চমকপ্রদ, বানোয়াট কাহিনী বানিয়ে ভক্তদেরকে বিমোহিত করে রাখে। অনেকগুলো বিরাট সংগঠন দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে সাহিত্যিক দিক থেকে উচ্চমানের, পাঠ মধুর ‘ধর্মীয়’ বই লিখে বাজার ভরে ফেলার, যাতে করে মানুষ সেই সব বই থেকে ধর্ম শেখা শুরু করে এবং তাদের মুল ধর্মীয় গ্রন্থের ধারে কাছেও না যায়। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে এমন একটি ধারণা প্রচলন করার যে – সাধারণ মানুষের জন্য মূল ধর্মীয় গ্রন্থ লেখা হয়নি; সাধারণ মানুষ মুল ধর্মীয় গ্রন্থ পড়লে ভুল বুঝবে। তার চেয়ে আমাদের এই বইগুলো পড়। আমরা সহজ, সরল ভাবে তোমাদেরকে সঠিক ধর্ম শিখিয়ে দিবো। এই বইগুলো তাদের আয়ের এক বিরাট উৎস। আর এই বইগুলো থেকেই শুরু হয় গণ মগজ ধোলাই। এভাবে যখন মগজ ধোলাই করে মানুষের উপর ধর্মীয় কর্তৃত্ব নিয়ে নেওয়া যায়, তখন মানুষকে দিয়ে ধর্মের নামে এমন কিছু নাই যা করানো যায় না। মানুষকে বিশ্বাস করানো যায় যে, অন্য ধর্মের মানুষরা হচ্ছে অপবিত্র, তাদেরকে হত্যা করা ধর্মীয় দিক থেকে একটি বড় পুণ্যের কাজ। মানুষকে বিশ্বাস করানো যায় যে অন্য ধর্মের উপাসনালয়গুলো সব ভেঙ্গে ফেলা শুধু জায়েজই না, বরং তা অনেক সওয়াবের কাজ। এভাবে শির্ক থেকে শুরু হয় ধর্মীয় কারণে চাঁদাবাজি, দলে দলে মারামারি, মানুষ গুম করে দেওয়া এবং একসময় পুরোদস্তুর মাফিয়া সংস্কৃতি।
মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় যাবতীয় সমস্যার সমাধানের প্রথম ধাপ হচ্ছে –
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – আল্লাহ ছাড়া আর কোনই প্রভু নেই। [কু’রআন]
একাম এবাদ্বিতীয়ম, না তাস্য়ে প্রাতিমা আস্তি – তিনি এক, অদ্বিতীয়, তার কোনো প্রতিমা নেই। [উপানিষাদ]
Thou shalt have none other gods before me. [বাইবেল]
শির্ক এই প্রথম ধাপটিকেই ভেঙ্গে দেয় এবং মানুষের সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে সঠিক পথনির্দেশ চাইবার জন্য অত্যাবশ্যকীয় মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। একারণেই যারা শির্ক করে, তাদেরকে যুক্তি দিয়ে কিছু বোঝানো যায় না। তারা সত্য দেখেও দেখে না, মানতে চায় না। তাদেরকে বাপ-দাদার অন্ধ অনুকরণ করা থেকে বের করে আনা যায় না। যার ফলে তাদের পক্ষে কখনই সঠিক ধর্ম অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। আর যারা সঠিক ধর্ম অনুসরণ করে না, তারা শুধু নিজেদেরকেই নয়, বরং তার আশেপাশের মানুষের, সমাজের, জাতির ধ্বংস ডেকে আনে – যা এক বিরাট অপরাধ।
যখন তাদেরকে বলা হয়, “যা আল্লাহ্ তোমাদেরকে পাঠিয়েছেন তা অনুসরণ কর।” তখন তারা বলে, “না, আমাদের বাপ-দাদা যা অনুসরণ করেছে, আমরাও সেটাই অনুসরণ করবো।” কি! যদিও তাদের বাপ-দাদারা কিছুই বুঝতো না এবং তারা সঠিক পথেও ছিলো না? [বাকারাহ ২:১৭০]
শির্কের আরেকটি সমস্যা হল সৃষ্টিকর্তাকে হেয় করা। এটা দুই ভাবে করা হয় – ১) মনে করা যে সৃষ্টিকর্তার কাছে চেয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না, তাই তাবিজ লাগাও, আংটি পড়, যাতে করে অন্য কোনো দৈব প্রক্রিয়ায় কাজটা আদায় করা যায় এবং ২) সৃষ্টিকর্তাকে কোনো কিছু ছাড়া খালি খালি ডাকলে তিনি আমাদের দিকে বেশি ‘মনোযোগ’ দেন না, তাই একটা মূর্তি ব্যবহার কর, পীর ধর, ইমাম ডেকে আনো, যাতে করে তাঁকে আরও ভালোভাবে ডাকা যায়, তাঁর মনোযোগ বেশি করে পাওয়া যায়। আপনি যদি কাউকে জিগ্যেস করেন, “ভাই কেন আপনি এই মূর্তিটার প্রতি উপাসনা করছেন?”, অথবা, “ভাই, কেন আপনি দেওয়ালে একটা কা’বার ছবি টাঙিয়ে রেখেছেন?”, অথবা, “ভাই, কেন আপনি এই ক্রসটা বুকে ধরে রেখেছেন?”, সে আপনাকে বলবে, “আসলে এটা কিছুই না, আমি এটা ব্যবহার করি আমার মনোযোগ বাড়ানোর জন্য।” তাহলে তো সেটা আপনার মনোযোগের সমস্যা! কেন আপনি সৃষ্টিকর্তাকে এমন এক রূপ দিচ্ছেন যা করার অনুমতি তিনি আপনাকে দেন নি, বরং উল্টো তিনি কঠিন ভাবে মানা করেছেন যেন তাঁকে কোনো রূপ দেওয়া না হয়, তাঁর কোনো প্রতিমা বানানো না হয়? যদি মনোযোগ বাড়াতেই হয়, তাহলে তাঁর অসাধারণ সৃষ্টি জগতের কথা ভাবুন, আকাশের দিকে তাকান, আপনার চারপাশের সৃষ্টিগুলোকে দেখুন, তিনি কতভাবে আপনার জীবনে কল্যাণ দিয়েছেন – সেগুলো কৃতজ্ঞতা নিয়ে ভাবুন। মেডিটেশন করুন, মনোযোগ বাড়াবার জন্য কত মানসিক ব্যায়াম আছে সেগুলো করুন। দিনরাত গান শোনা, টিভি দেখা, ভিডিও গেম, ফেইসবুক, ইউটিউব, মোবাইল ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফালতু আলাপ, মার্কেটে বেহুদা ঘুরে বেড়ানো, তারকাদের গসিপ, খেলার স্কোর, খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার, খবরের কাগজে খুন, ধর্ষণ, দলাদলির খবর – এগুলো বন্ধ করুন, যাতে আপনার মগজ ভর্তি এসব অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিলবিল না করে মনের ভিতরে শান্তি এবং মৌনতা বিরাজ করে এবং প্রার্থনার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন।
একইভাবে আপনি যদি কাউকে জিজ্ঞেস করেন, ভাই কেন আপনি পীরের মুরিদ হচ্ছেন, কেন শেখের বয়াত নিচ্ছেন, কেন ইমাম ভাড়া করে এনে মিলাদ পড়াচ্ছেন? সে বলবে, “ভাই, আমি তো অধম, পাপী। ওনাদের মতো পবিত্র মানুষরা আমার হয়ে দোয়া করলে আল্লাহ আরও বেশি করে শুনবেন।” তাহলে আপনি কেন অধম হয়ে থাকছেন? কেন পাপী হয়ে থাকছেন? আল্লাহ তো আপনাকে উত্তম বান্দা হবার সব ব্যবস্থাই শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনি তো আপনার সকল পাপ মাফ করে নেওয়ার কত সুযোগই আপনাকে দিয়েছেন। সেগুলো চেষ্টা না করে কেন দুই নম্বরি, শর্টকাট ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা করছেন? আপনার কি আল্লাহর বাণীর উপরে কোনো ভরসা নেই?
কিন্তু যারা তওবা করে, গভীরভাবে বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পুণ্য দিয়ে বদলিয়ে দিবেন। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, নিরন্তর দয়ালু। [ফুরকান ২৫:৭০]
আকাশ এবং পৃথিবীর সবকিছুর মালিক আল্লাহ। তিনি যাকে চান তাকে মাফ করেন এবং যাকে চান তাকে শাস্তি দেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, নিরন্তর দয়ালু। [৩:১২৯]
সুত্রঃ
- শেখ ইয়াসির কাযি – নবী/পীর/শেখ, তাবিজ, দোয়ার ক্ষমতা।
- ডঃ বিলাল ফিলিপস – তাওহিদ
Very nicely writtedn. super like. Just one suggestion: it would have been better to include Brahma movement (only one god)of early 20th centruuy in India.
Vaia , amar room e Allah lekha arbite ekta Frame tanano ase . eita ki Islam er biruddhe hoy ?
Please refer to this fatwa:
http://islamqa.info/en/ref/254
Why resort to the personal opinion of a Shaikh while answering a straight forward question? The fatwa of the Shaikh not have a single reference to any quranic verse or sahih hadith. It is filled with his personal view and logical deduction. At one point, the fatwa says that writing Allah’s name or quranic verse and hanging them on the wall is bidaah because it was not so done during the time of Prophet (S:). Well, this type of logic will render written forms of hadith books and fatwa books and blogs as bidaahs because these things were also not done in the time of the Prophet. Can any sane person say that writing Allah’s name and hanging it on the wall is a shirk? Is it comparable to the g amulets of Rasulullah’s time? The blind following of peers as well as shaikhs make people forego Allah and Rasulullah (S:). Sometimes the preachers against shirk may fall into this trap. May Allah save us from taking our peers, shaikhs and scholars as our Rab. One should be extremely cautious of terming something haram which hasn’t been declared as haram by Allah or His Rasul.
ekhn sob mosjideo dekhi kalima sahadat ebong vibinno sura lekha tiles vibinno jaygay decorate kora. eitar bepare kii bolben ??
Please see: http://islamqa.info/en/178
http://islamqa.info/en/254
মাশাআল্লাহ ভাইয়া, সুন্দর লিখেছেন। ছোটবেলায় ফাযায়েলে আমল, নেয়ামুল কোরআন সহ আরো এমন কিছু বই পড়ছি যা পরবতির্তে জেনেছি অনেক ভুল দিয়ে ভরা। আর ছোটবেলায় যখন আমরা কুরআন শিখেছি, কখনও কেউ এভাবে বলে নাই যে অথর্সহ বুঝে বুঝে পড় এবং তা জীবনে প্রতিফলন কর।
ভাইয়া নারি পুরুষের পর্দা বিষয়ক কোন article লিখেছেন কি?
নাহ, আমার ফিকহ নিয়ে কোনো ডিগ্রি নেই। যোগ্যতা হোক, তারপরে লিখবো।
Some good lectures I have seen on this topic are these:
http://www.youtube.com/watch?v=arXHPNoszGE
http://www.youtube.com/watch?v=uHR4odoyl8c
http://www.youtube.com/watch?v=AC4C-Okphak#t=00m55s
i like the way you wrote…jajakallahu khairan.
if Allah permits, kindly try to write also about the importance of learning the language of Qur’an…as non-arabs..we are really far from getting access to the treasures of islam and not able to carry the knowledge with pride and happiness….we became generation of guilt. Barakallaha feikum.
কু’রআনের আরবি না জানার কারণে আমরা যে কত কিছু মিস করছি, সেটা নিয়ে আমি অনেক আর্টিকেল লিখেছি। চেষ্টা করেছি কু’রআনের আরবির মধ্যে লুকিয়ে থাকা হাজারো চমকপ্রদ তথ্যকে আধুনিক মানুষের পড়ার উপযোগী করে তুলে ধরার। যেমন দেখুনঃ
সূরা ফাতিহা – যা আমাদেরকে শেখানো হয়নিঃ
http://blog.omaralzabir.com/2012/11/14/surah-fatiha-what-we-dont-know/
সূরা ইখলাস – আমরা এর কত কমই জানিঃ
http://blog.omaralzabir.com/2013/03/04/surah-ikhlas/
এছাড়াও কু’রআনে যে আরও কত কিছু আছে, সেগুলো নিয়ে লেখা কিছু আর্টিকেলঃ
http://blog.omaralzabir.com/2012/08/10/is-there-anything-in-quran-for-me/
http://blog.omaralzabir.com/2012/07/31/i-dont-like-reading-quran/
http://blog.omaralzabir.com/2012/07/27/praying-without-understanding/
http://blog.omaralzabir.com/2012/07/24/simple-verse-but-amazing-info/
http://blog.omaralzabir.com/2012/07/24/important-of-thinking/
THANX FOR THAT ARTICLE ,JUST WAITING WHEN YOU GONNA START WRITING IN ENGLISH….LOL
মাশা’আল্লাহ ভাই। শিরকের ব্যাপারগুলো সুন্দর করে ফুটে উঠেছে লেখায়। পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। জাযাকাল্লাহ খাইরান 🙂
আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছি। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
চাকুরির ক্ষেত্রে মামা ধরে অবৈধভাবে কিছু সুবিধা ভোগ করতে পারছে। কিন্তু যারা দ্বীনের ক্ষেত্রে এটা করছে তারাতো উভয় জায়গায় ক্ষতিগ্রস্থ।
কি আপনার হাক্বিকত ফাস হয়ে যাবে বলেই আমার কমেন্ট পোষ্ট করা হয়নি।
ধ্বংস হউক বাতিল 72 ফিরক্বার দলগুলো।
“সত্য এসেছে মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ারই যোগ্যা” (সুরা-ইসরা:81)
আপানার কমেন্টগুলো অপ্রাসঙ্গিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কিছু বিতর্কিত ওয়েবসাইট প্রচারের জন্য। ওয়েব সাইটগুলোতে বিতর্কিত হাদিসের ছড়াছড়ি, যার বেশিরভাগ সাহিহ নয়। অনুগ্রহ করে এরকম করবেন না। শুধু মাত্র কু’রআনের আয়াত এবং সাহিহ হাদিসের উপরে ভিত্তি করে আর্টিকেল থাকলে শেয়ার করুন। দোয়া করি আল্লাহ ﷻ আপনাকে অন্তরের উদ্দেশ্য এবং কাজের মধ্যে মিল রাখার তৌফিক দিন।
Among the people, there are those who uphold baseless hadith (لَهْوَ ٱلْحَدِيثِ), and thus divert others from the path of God without knowledge, and take it in vain. These have incurred a shameful retribution. (31:6).
And of the people is he who buys the amusement of speech to mislead [others] from the way of Allah without knowledge and who takes it in ridicule. Those will have a humiliating punishment.
[ 31:6 ]
Vaia, মেডিটেশন a to anki gaphla ace? atato naki haram? ai bepare details jante chai.
যদি কোনো মেডিটেশন পদ্ধতিতে ইসলামের পরিপন্থি কিছু করা না হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। পৃথিবীতে সবকিছুই হালাল, যদি না তা হারাম হিসেবে আল্লাহ বা রাসুল (সা) আদেশ করে না থাকেন।
ধ্যানে নিমগ্ন থাকার ঘটনা আমাদের নবীর জীবনেও আছে। যেমন মুহাম্মাদ (সা) হেরা গুহায় মেডিটেশন করতেন। সেটা নিশ্চয়ই হারাম ছিল না।
প্রশ্ন হচ্ছে মেডিটেশনের নামে আসলে কী করানো হচ্ছে।
জাবির ভাই আপনার নিকট আমার একটি প্রশ্ন : কেয়ামতের ময়দানে আম্বিয়ায়েকেরামগণ ,শহীদ গণ ,সাহাবী গণ , আল্লাহর প্রিয় বান্দা তথা ওলি গণ , মুমিনগণ কি মুসলমান জাহান্নামীদের জন্য শাফায়াত করতে পারবে। জানালে খুশি হব।
মি: জাবির আপনার শিরক বিষয়ক আর্টিকেলটা আমি পড়ে দেখলাম । এখানে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে আউলিয়ায়েকেরাম তথা আল্লাহর নেককার (পীর/মাশায়েক) বান্দাদেরকে ছোট করার জন্য বিভিন্ন কোরআনের আয়াতের রেফারেন্স দিচ্ছেন অথচ এই আয়াতগুলো মহান রাব্বুল আলামিন নাযিল করেছেন কাফির মুশরিকদের জন্য আর সেগুলোকে এখন আপনি আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের আক্রমন করার জন্য বড় অস্ত্র হিসাবে ব্যবাহার করছেন।
আপনি আর্টিকেলে লিখেছেন যে,
সে দিনের ভয় কর যেদিন কোন সত্ত্বা অন্য কোন সত্ত্বার সাহায্যে এগিয়ে আসবে না এবং তার থেকে কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং তার থেকে কোনো ক্ষতিপূরণও নেওয়া হবে না এবং তাদেরকে কোনই সাহায্য করা হবে না। [বাকারাহ ২ঃ৪৮]
কোনো পীর, গুরু কিয়ামতের দিন কোনো মুরিদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে না। সেই সুযোগই তাকে দেওয়া হবে না। সে নিজের হিসাব দিতেই ব্যস্ত থাকবেঃ
আপনি কোরআনের যে আয়াত প্রদান করলেন এটা সর্বজনস্বীকৃতপ্রাপ্ত যাদেরকে মুহাদ্দিসগণ নির্ভরযোগ্য মনে করে সে পর্যায়ের তাফসির কারকেরা কি ব্যাখ্যা প্রদান করলেন তা আপনি উল্লেখ করেননি শুধুমাত্র আপনার আক্বিদায় বিশ্বাসি কিছু অগ্রহন্যযোগ্য ফিতনাবাজ লোকের তথাকতিত গ্রন্ত্র হতে রেফারেন্স তুলে দিলেন যা কোন অবস্তায় গ্রহণ যোগ্য হতে পারেনা । এ আয়াতে কারিমা গুলোর ব্যাপারে অনেক কতাবার্তা আছে যাক লম্বা কথার সে দিকে গেলাম না আমার কয়েকটা প্রশ্ন রইল আশা করি উত্তর দিবেন ।
পীর মানে গুরু, শিক্ষক বুঝায় এই শব্দটাকে তামাসায় পরিণত করেছেন যাতে মানুষ ভাবে এটা একটা হাসির বস্তু অথচ এটি ফারসী শব্দ সুতরাং এই শব্দ নিয়ে আপনাদের জ্ঞান পাপীরা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন।
আপনাদের জন্য মহান রব ১৪00 বৎসর পূর্বে হাদিসে কুদসিতে ঘোষনা করেছেন :
“যারা আমার অলির বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষন করে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলাম”
[সহিহ বুখারী শরীফ]
সুতারাং জ্ঞানীর জন্য ইশারায় যথেস্ট বেশী কিছু বলার দরকার হয়না।
আপনি এমন কিছু নামদারী পীরকে যারা শরিয়তের কোন তোয়াক্কা করেনা তাদেরকে সামনে রেখে পুরো হক্কানী পীর মাশায়েকের সম্মান হানী করলেন । আল্লাহর কাছে বিচার রইল
অথচ মহান রব তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন:
আামার অলিগণের কোন ভয় নেই, পেরেশানি নেই তারা চিন্তিতও হবেনা (আল-কোরআন)
আপনি আরো লিখেছেন যে, “তারা নিজের হিসাব দিতেই ব্যস্ত থাকবে”
অথচ মহান রব বলেছেন :
“আমি প্রত্যেককে তার ইমাম সহকারে ডাকব” (আল-কোরআন)
তাফসিরে ইবনে আব্বাসে যুগের অনুসরণীয় ব্যাক্তিকে সহ ডাকা হবে উল্লেখ আছে।
আপনি মানুষকে আল্লাহর নেককার বান্দাদের কাছ থেকে দুরে রাখা ষড়যন্ত্রের অগ্রনায়ক তাই একটি হাদিস পেশ করছি:
উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যা রাসুল (সা:) বলেছেন। সহিহ মুসলিমের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণিত আছে আমি শুধু সারমর্ম উল্লেখ করছি।
তোমাদের নিকট ইয়ামন থেকে ওয়ায়েস নামক একজন ব্যাক্তি আসবে তোমরা যদি তার সাক্ষাত পাও তাহলে অবশ্যই তাঁর দ্ধারা তোমাদের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করিয়ে নেবে। সে আল্লাহর এত বেশী মকবুল বান্দা যে সে যদি আল্লাহর শানে কসম করে কিছু বলে ফেলে সেটা আল্লাহ অবশ্যই দেবেন তাই যেই তার সাক্ষাত পাও সে যেন তার মাগফেরাত করিয়ে নেয় ।
অথচ সেরকম আল্লাহর প্রিয় বান্দা পৃথিবীতে থাকবে তারা (অলি আল্লাহ ) হিসাবে পরিচিত তাদের কাছ থেকে মুসলমানদের সরিয়ে রাখার উন্মাদায় মেতে উটেছেন । জানিনা কাদের স্বার্থ বাস্তবায়নে আপনাদের মাঠে নামা।
আপনি সিজদা রত অবস্হার একটি ছবি পোস্ট যাকে শিরক হিসাবে আখ্যায়িত করলেন । প্রত্যেক প্রকার সিজদা শিরক নয় । কারণ কেউ যদি কাউকে সম্মান দেখাতে সেজদা করে বসে সেক্ষেত্রে তার জন্য হারামের ফতোয়া আসবে শিরকের ফতোয়া নয় । কারণ সে তাকে প্রভু হিসাবে সিজদা করেনি এখানে নিয়তের বিষয় রয়েছে সে যদি নিয়ত করে এটি আমার প্রভু তবে শিরক হবে । আপনাদের দৃষ্টিতে শিরক হয় । তাহলে হযরত আদম (আঃ) কে ফিরিস্তারা আল্লাহর নির্দেশে যে সিজদা করেছিল সেটাও শিরকে পরিণত হবে।
যা আপনারা মানুষকে শিরকের আর্ঠিকেলের অন্তরালে মুর্খতা শিক্ষা দিচ্ছেন এছাড়া আর কিছুই নয় । আপনি শিরক ও হারামের মধ্যে পাথর্ক্য বুঝতে বড় ধরনের ভূল করেছেন তাই শিরকের আর্টিকেলে বড় ধোকা বাজি করেছেন
আর কোরআনের আয়াতগুলো আউলিয়েকেরামের শানে ফিট করে দিয়েছেন যা নিজের মুর্খতা/ ভন্ডামি/ ধোকাবাজি/বেয়াদবির শীর্ষ পর্যায়ের ব্যাক্তি হিসাবে প্রমান করেছে।
ভাই, আপনার সাথে আমার শাফাআত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আপনি এখানে যেই বিষয়গুলো এত সুন্দর মার্জিত ভাবে, একজন যথাযথ মুমিনের ভাষা ব্যবহার করে বললেন, সেগুলোর পিছনে সমস্যা একটাই: আপনি সূফী আক্বিদায় বিশ্বাসী এবং আপনি শাফাআত সম্পর্কে একধরনের ধারণা রাখেন; আর আমি সূফী আক্বিদায় বিশ্বাসী নই, আমি আহলে সুন্নাহ ওয়া আল জামাহ, বিশেষ করে সালাফিয়্যাহ আক্বিদায় বিশ্বাসী এবং তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য শাফাআতের ধারণায় বিশ্বাস করি। আমি আপনাকে আগেও শাফাআতের ব্যাপারে রেফারেন্স দিয়েছিলাম। আপনি হয়ত সেগুলো পড়ে দেখেননি। দেখলে এই ধরনের মন্তব্য করার পেছনে কোনো কারণ দেখি না। অথবা হয়ত পড়ে দেখেছেন, কিন্তু নিজেকে পরিবর্তন করতে পারেননি। ঠিক আছে, ভালো কথা। আপনার অন্তরের পরিবর্তনের দায়িত্ব আমার নয়, এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছা। আপনি আপনার আক্বিদায় অটুট থাকবেন কিনা সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার।
আসুন, আমরা অযথা কুতর্ক না করে, অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে ঈমান না হারিয়ে, নিজেদের পছন্দ মতো আক্বিদার প্রচারক এবং অনুসারীদেরকে একমাত্র সঠিক মনে করে এবং অন্য সবাইকে ভুল মনে না করে, নিজেদের স্বল্প গণ্ডির বাইরে যে ইসলামের এক বিশাল জ্ঞানের আঁধার রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে পড়াশুনা করি, নিজেকে সে অনুযায়ী পরিবর্তন করার চেষ্টা করি। আমি সেটা করব এবং সে অনুযায়ী আমার আর্টিকেলগুলোকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন করব, আপনিও সেটা করুন।
সবসময় একটা ব্যাপার মনে রাখবেন: হতে পারে আপনি আজ থেকে ১০ বছর পরে গিয়ে সূফী আক্বিদা ছেড়ে দিয়ে সালাফিয়াহ আক্বিদায় বিশ্বাসী হয়ে গেলেন। তখন যেন আপনার অতীত জীবনের এই সব অশ্রাব্য কথাবার্তা, গালাগালিগুলো আপনাকে সারা জীবন তাড়িয়ে না বেড়ায়, চেষ্টা করুন ভবিষ্যতের জন্য সেই নিরাপদ ব্যবস্থা করে রাখার।
আপনি বারবার বলেছেন আপনাকে গালি দেওয়া হচ্ছে । আপনার শিরক আর্টিকেলে আমাদের সম্মানিত পীর মাশায়েকদের সাথে যে বেয়াদবি /গালিগালাজ করেছেন সেটা খুব ভালো কাজ করেছেন তাই না সেই হিসাবে আমি আপনার সাথে শত গুন ভাল আচরণ করেছি। আপনার কথাগুলো অবান্তর অপ্রয়োজনীয় এবং সুকৌশলে বাস্তব ও সত্য বিষয়কে কথার মারপ্যাছে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আপনি আমার কমেন্টগুলো যদি পারেন সংক্ষিপ্ত পরিসরে অযোক্তিক মিথ্যা বানোযাট সেটা প্রমান করুন এছাড়া আর অযথা কথা বলে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি এড়িয়ে যাবেন না্ কারণ আপনি ভদ্র ভাষায় যথেস্ট আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের গালিগালাজ করেছেন নবীদের কে ছোট করেছেন আপনি নিজের বানোয়াট কথার মধ্যে কোরআন হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে কোরআন এবং হাদিসের যথেস্ট অবমাননা করেছেন সেটা পড়ে যত মানুষ বিভ্রান্ত হবে সমস্ত দায় আপনার উপর বর্তায়। আমি আপনাকে
আপনার রেফারেন্স আমি অনেক পড়েছি আপনি আমার দেওয়া বিখ্যাত মুহাদ্দিসদের কিতাব গুলো মোটেই পড়েন নি । আজ থেকে ২০০-৩০০ বৎসর আগের কথা হিসাব করলে আপনি আপনার পূর্ব পুরষদের বেদিন ও কাফির হিসাবে
খুজে পাবেন যাদের সঠিক নয় ভাবছেন তাদের কারণে আপনি /আপনার পূর্ব পুরুষ আজকে ইসলাম পেয়েছেন এখন তাদের সাথে যে বেয়াদবি করছেন সেটা নিমক হারামী ছাড়া কিছুই নয় । আর আমি সালাফি হব সেটা কল্পনাতেও আনার কোন প্রয়োজন নেই । আমি আপনাকে কোর্স করিয়েছেন যে সুফী সেই সুফীর অনুসারী নই । আমি এমন সুফীর অনুসারী যে শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণকারী ও এবং রাসুল (সা:) দ্ধারা রু আইয়ে সালেহার মাধ্যমে তথা (সুসপ্ন) দ্ধারা সার্টিপাই করা সুফীর অনুসারী ।
আমি যে কটি আপনার আর্টিকেলের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছি পারলে সেগুলোর কোরআন হাদিস সম্মত উত্তর দিন সেটাই প্রত্যাশা করছি । কৌশলে প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যাওয়ার সুচতুরতা আশা করছি না । আপনি সিজদার ছবিটা পোস্ট করেছেন সেটাও সঠিক নয় সেটা সিজদা নয় বরং পায়ের চুমু খাওয়ার মত একটা দৃশ্য । অথচ সেটা হাদিস সম্মত হয়ে যাচ্ছে ।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হযরত রাসুলে আকরাম (সাঃ) এর কদম মোবারকে চুমু খেয়েছেন (আল আদাবুল মুফরাদ )
হযরত আলী (রা:) ইবনে আব্বাসের পা মোবারকে একই ভাবে চুমু খেয়েছেন
(আল আদাবুল মুফরাদ )
সুতরাং সটিক তথ্য তুলে ধরুন । আমার কমেন্টগুলো মিথ্যা প্রমান করুন ।
মহান আল্লাহ আমাদের ছেরাতুল মুস্তাকিমের পথে খাকার তৌফিক দান করুন । আমিন
ভাই, আপনি কোথা থেকে পেলেন যে, আমি পৃথিবীর যাবতীয় পীর, দরবেশদের বদনাম করেছি? আমার আর্টিকেলে বার বার বলা হয়েছে ওইসব ভণ্ড পীর দরবেশদের কথা, যাদের যথাযথ ইসলামের শিক্ষা নেই, যারা তাদের দলবল নিয়ে মাজারের ব্যবসা করে যাচ্ছে। আপনি আর্টিকেলটা ঠাণ্ডা মাথায় পড়লেই দেখবেন কী লেখা আছে। আপনি মাথা গরম করে, আপনার আক্বিদার প্রতি আক্রমণ হচ্ছে, এই ধরে নিয়ে আর্টিকেলটা পড়ছেন দেখেই আপনার যত সমস্যা হচ্ছে। না হলে প্রায় ১০০০০ মানুষ এই আর্টিকেল পড়েছে এবং কেউ আপনার এই ধারণা এখন পর্যন্ত মনে করেনি যে, পৃথিবীর যাবতীয় আলেম, উলামা, পীর, দরবেশদের বিরুদ্ধে আমি কিছু লিখেছি।
আমরা যাদের কাছ থেকে ইসলাম পেয়েছি, সেই আলেমদের আমি অবশ্যই সন্মান করি। সেই আলেমদের কথা এবং কাজই তো আমরা ব্যবহার করছি এই সব আর্টিকেল লিখতে গিয়ে। এই আর্টিকেলে যেই সব কথা বলে হয়েছে, সেগুলো তো আর আমার স্বপ্নে প্রাপ্ত কোনো ঐশী বাণী না। বরং এগুলো আগেকার যুগের উলামাদের কাজের উপর ভিত্তি করেই লেখা। আমি শুধুই একজন অনুবাদক। এই আর্টিকেলের সবকিছুই এসেছে কোনো না কোনো আলেমের কাজ থেকে, এবং ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটির আক্বিদা কোর্সের পাঠ্য বই থেকে।
আপনার সাথে আমার কু’রআন হাদিসের রেফারেন্স লেনদেন যথেষ্টই হয়েছে। আমার লেখার সমর্থনে যতই আয়াত, হাদিস দেখাই, আপনি সেটা মানেন না। আপনি আপনার সমর্থনে কিছু হাদিস দেখান, যেগুলো সালাফিয়্যাহ যথেষ্ট দলিল দিয়ে পরিত্যাগ করেছে। আমি যেই মুহাদ্দিসদের মানি, আপনি তাদের মানেন না। সুতরাং আমাদের এমন কোনোই কমন গ্রাউন্ড নেই, যা ব্যবহার করে আমরা তর্ক করতে পারি। তর্ক করার জন্য কমন গ্রাউন্ড দরকার।
ভাই, আপনি এই মুহূর্তে কোনোভাবেই প্রস্তুত নন আমার দেওয়া কোনো রেফারেন্স শোনার, কারণ আপনি বলেছেন:
“আর আমি সালাফি হব সেটা কল্পনাতেও আনার কোন প্রয়োজন নেই”।
এই রকম মানসিকতার কোনো মানুষের সাথে তার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কিছু বলে কোনো লাভ হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। বরং আপনি যদি বলতেন, “আমি সালাফি হব, যদি আপনি আমাকে প্রমাণ করতে পারেন, সালাফি আক্বিদা সূফী আক্বিদা থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি সঠিক” — তাহলে অন্তত আপনার সাথে কোনো কথা বলে কোনো লাভ হতো। আমরা শুধু শুধুই সময় নষ্ট করছি।
আমি একটা রেফারেন্স দিলে আপনি আপনার আক্বিদায় বিশ্বাসীদের নানা ধরনের মতবাদ নিয়ে এসে আপনার মন্তব্য সমর্থন করার চেষ্টা করবেন। এরকম করলে আমরা কোনোদিনও কোনো উপসংহারে পৌঁছাতে পারব না। আমাদের পক্ষে উপসংহারে পৌঁছানো তখনি সম্ভব হবে যদি— ১) আপনি যেই ভয়াবহ একরোখা সূফী আক্বিদা অনুসরণ করছেন সেটা পরিত্যাগ করেন, অথবা, ২) আমি যেই সালাফি আক্বিদা অনুসরণ করি, সেটা পরিত্যাগ করে আপনার সূফী আক্বিদার ভার্শন অনুসরণ করি।
এই দুটোর কোনোটি হওয়ার সম্ভাবনা এখনও নেই, ভবিষ্যতে হতে পারে, ইন শাআ আল্লাহ। সুতরাং, সালাম দিয়ে আপনার সাথে যাবতীয় আলোচনার ইতি টানছি। আপনি আমার মুসলিম ভাই, আমরা এক আল্লাহর ইবাদত করি। সূফী, সালাফি এগুলো সবই অপ্রয়োজনীয় টাইটেল। আমি আপনার জন্য দু’আ করি যেন আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দেন।
সালাম।
ওয়ালাইকুম আস সালাম !
আপনি আমার দেওয়া হাদিসের রেফারেন্সগুলো অস্বীকার করে বসলেন । অথচ আমি আপনাকে সহিহ হাদিস পেশ করেছি। আপনি বলছেন আমি কোরআনের আয়াতকে অস্বীকার করেছি বা মানতেছিনা যা আপনার বুঝতে না পারার সমস্যা । আপনার যদি সৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আপনি আমার দেওয়া হাদিসগুলো মিথ্যা বানোয়াট প্রমান করুন । আপনি বললেন, আমি কতগুলো মতামতকে রেফারেন্স হিসাবে দাড়ঁ করাচ্ছি সেটা বলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ কারণ আপনি আমার প্রশ্ন তুলতে আরো সুবিধা করে দিয়েছেন ।
###আপনি যে জাল/ যয়ীফ /সহিহ হাদিস গুলো উল্লেখ্য করে হাদিসের যে অবস্হান মানুষের কাছে প্রচার করছেন সেগুলো কি আপনি হাদিসের রেফারেন্সে প্রমান করেছেন ,নাকি বিভিন্ন মুহাদ্দিসের মতামতকে গ্রহন করে সেটা উপর ঈমান আক্বিদাকে পোষন করছেন সেটা আমার প্রশ্ন রইল আপনার কাছে।
#তার উত্তর হচ্ছে আপনি মুহাদ্দিসদের মতমতকে গ্রহণ করেছেন
সুতরাং শীর্ষ পর্যায়ের মুহাদ্দিসের মতামত রেফারেন্স দিয়ে আমি ভূল করিনি এটা প্রমান করলাম।
# আপনি বললেন ,আমি কোরআনের আয়াতকে অস্বীকার করছি। আপনি আমার একটা কথাতেও সে দোষটা প্রমান করতে পারবেননা আমি আপনাকে শুধু বলেছি কোরআন ও সহিহ হাদিসের মধ্যে সমন্বয় করে বিষটির ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কারণ কোরআনের আয়াত ও সহিহ হাদিস কোন অবস্হাতেই সাংঘর্ষিক হবেনা কিন্তু আপনার কোরআনের রেফারেন্সগুলো সহিহ সাথে পুরো গরমিল লেগে গেছে । আমি আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভীর তাকমিলুল ঈমান গ্রন্তটা আপনাকে পড়ার জন্য বলেছি কারণ সেখানে যথেস্ট সহিহ হাদিসের ব্যাখ্যা দ্ধারা শাফায়তকে তিনি প্রমান করেছেন যা অতিব বিস্তৃত হবে কিন্তু সেই কিতাবটি আপনি পড়ে দেখেননি বিধায় আপনি বুঝতে পারছেন না শাফায়াতেরে পরিস্কার অবস্হানটা কি আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী এমন ব্যাক্তি যাকে সালাফিরা পর্যন্ত সম্মান করতে বাধ্য কারণ তিনি নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিসের অন্তরভুক্ত যাকে এক কথায় ভারতীয় উপমহাদেশের মুহাদ্দিসকুল সম্রাট বলা হয় । তার কিতাবের রেফারেন্স আপনার কাছে তুচ্চ মনে
হয়েছে।
# কোরআনের প্রথম ব্যাখ্যা হচ্ছে সহিহ হাদিসের রেওয়াত গুলো সুতরাং সহিহ হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে আমি ভূল করিনি ।
#আপনি বলছেন, আপনি আহলে সুন্নাহ ওয়া আল জামাহ অথচ এই শব্দটা হাদিসের মধ্যে কোন উল্লেখ্য ও নেই এটা মুহাদ্দিসদের আবিস্কার আবার এদের মতামত আমি পেশ করলে আপনি গ্রহণ করতে পারতেছেননা। নিজের কথার মধ্যে নিজের সাংঘর্ষিক বাদিয়ে দিলেন ।
#আপনি শিরকের আর্টিকেলে শাফায়তের অননুমোদিত আয়াত গুলো ব্যাখ্যা দিলেন কিন্তু পরে লিখলেন তিনটি শর্তে পারবে কেমনে পারবে সংক্রান্ত কোরআনের আয়াতগুলো ও হাদিসের সহিহ রেওয়াত গুলো কোথায় সেটা তো রেফারেন্স দিলেন না রেফারেন্স না থাকলে আপনার যুক্তিতে আপনি তিরস্কিত হয়ে গেলেন ।
#আপনি বলেছেন আমি আর্টিকেলে সকল পীরকে বলিনি । আপনি হক্কানী পীর /মাশায়কেদের বাদ দিয়ে শুধু মাত্র যারা মাজার নিয়ে তামাসায় মেতে আছে তাদের কে বলেছি। # এই কথাটা আপনার আর্টিকেলে বিন্দু মাত্র ও আপনি উল্লেখ করেননি করলে এত তর্কের প্রয়োজন হতনা আমার ও বিশ্বাসে আঘাত লাগত না ।
#সর্বশেয় কথা হচ্ছে আপনি আমার ব্যাপারে যে মন্তব্যগুলো করেছেন পুরোটাই ব্যাক্তিগত যুক্তিগত একটা ও নাই
পারলে আমার দেওয়া হাদিস ও কোরআনে আয়াত গুলোর ভুল প্রমান করে আমাকে হিদায়তের পথের আনার চেস্টা করুন সেটাই হবে সফলতা । ১০০০০ হাজার মানুষ আর্টিকেল পড়ে কোন মন্তব্য করেনি বলে এটা শতভাগ সটিক হয়ে যাবে এটা বোকামি মার্কা কথা ছাড়া আর কিছুই নয় কারণ কোরআন হাদিস নিজে না বুঝলে আপনার কথার ত্রুটিগুলো কেমনে বুঝবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়ত দান করুন । আর শাফায়তকে স্বীকার করে আপনাকে রাসুল (সা:) এর শাফায়াতের মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়া তৌৈফিক দান করুন । আমিন
সালাম
ভাই আপনার এই মন্তব্যগুলো একেবারেই অপ্রয়োজনীয় কারণ আপনি আমার মুখে আপনার কথা তুলে দিয়ে অযথা তর্ক করছেন। আমাদের এই আলোচনা আর তর্কের পর্যায়ে নেই, কুতর্ক হয়ে গেছে। আমি যা বলছিনা, সেটা আপনি ধরে নিয়ে তর্ক করছেন। আমি যা লিখিনি বা লেখার চেষ্টাও করিনি, আপনি সেটা আমার নামে দাবি করে সেটা নিয়ে তর্ক করছেন। আমি আপনার কমেন্টের পয়েন্ট বাই পয়েন্ট নিয়ে বলতে পারি যে, আপনি কী কৌশল ব্যবহার করে তর্ক চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু সেটা করে কোনো লাভ হবে না, কারণ আপনি সেগুলোর উত্তরে আবারও তর্ক উপস্থাপন করবেন এবং সেটা চলতেই থাকবে।
আপনার ভেতরে সালাফিয়্যাহ-এর প্রতি যে ভয়াবহ ঘৃণা জমে গেছে, যা আপনার কমেন্টগুলো দিয়ে বের হচ্ছে, সেটা কোনোদিন কমেন্ট লিখে ঠিক করা যাবে না। এর জন্য দরকার সামনাসামনি কোনো সালাফিয়াহ আলেমের সাথে বসে কথা বলা।
সুতরাং ভাই, আপনাকে আমি আবারও বলছি, আপনি যথেষ্টই বলেছেন। আপনার সাথে তর্ক করার আর কোনো অবকাশ নেই। এটা এখন কুতর্কের পর্যায়ে চলে গেছে। আসুন আমরা ভদ্রলোকের মতো ইতি টানি। আমি আপনার লেখা পড়ে চিন্তা করে দেখব। আপনি আমার লেখা পড়ে চিন্তা করে দেখুন। তর্কের কারণে আমরা কেউ পড়াশুনা এবং চিন্তা করার সময় পাচ্ছি না। আমাদের দরকার যথেষ্ট সময় নিয়ে পড়াশুনা করে, চিন্তা করে, নিজেদেরকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা।
আমি ভদ্রতা বজায় রাখার জন্য আপনার কমেন্টগুলো এতদিন গ্রহণ করেছি। আপনাকে ভদ্রভাবে বহুবার বলেছি ইতি টানার জন্য, কিন্তু আপনি সেই ভদ্রতাটুকু বজায় রাখেননি। আমি এরপর আপনার আর কোনো কমেন্ট গ্রহণ করব না। দুঃখিত, কিন্তু আপনাকে থামানোর আর কোনো উপায় দেখছি না। মুমিনদের ব্যবহার হচ্ছে ইসলামের সবচেয়ে ভালো প্রচার। আমাদেরকে সুন্দর ব্যবহার, ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে। না হলে আমরা ইসলামের খামখা বদনাম করে যাবো।
আমি ভালোই করেই জানতাম যে , আপনি শেষ পর্যন্ত এটাই করবেন। কারণ আপনাদের আক্বিদা প্রচারের ক্ষেত্রে যারা আপনাদের বাধা হয়ে দাড়াবে তাদের কমেন্টকে আপনারা গায়েব করবেন এটাই স্বাভাবিক । এতদিন যে কমেন্ট আপনি দিয়েছেন এটাই আমি আশ্চর্য বোধ করেছি । সুতরাং আপনার জন্য উপযুক্ত একটি আয়াত দিয়ে ইতি টানলাম “সত্য এসেছে মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ারই যোগ্যা” (সুরা-ইসরা:81)
ঠিক বলেছেন ভাই, “সত্য এসেছে মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ারই যোগ্যা” (সুরা-ইসরা:81)
বেশিদিন এই সব আজেবাজে আক্বিদার মানুষরা টিকে থাকবে না। ইন শাআ আল্লাহ। ততদিন পর্যন্ত সবর করি।
আপনার সাথে অনেক বিতর্ক হযেছে এখন আর সে বিতর্ক নয় । যেহেতু আপনি ও আমার মুসলিম ভাই সেহেতু আমার কাছে সালাফি ঈমামদের কিছু তথ্য আছে তাই আপনাকে সেখান থেকে কপি করে পোস্ট করলাম
শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী সাহেব ইমাম বুখারী সম্পর্কে কি বলেছেন তা দিয়েই শুরু করছি . . .
ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করা-
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করেছেন। ইমাম বোখারী (রহঃ) বোখারী শরীফের “কিতাবুত তাফসীর” এ সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতের যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে সম্পর্কে নাসীরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) লিখেছেন,
ان هذا التأويل لا يقول به مؤمن مسلم وقال إن هذه التأويل هو عين التعطيل.
“এ ধরণের ব্যাখ্যা কোন মুমিন-মুসলমান দিতে পারে না। তিনি বলেন, এ ধরণের ব্যাখ্যা মূলতঃ কুফরী মতবাদ “তা’তীলের” অন্তর্ভূক্ত”
ইমাম বোখারী (রহঃ) সূরা কাসাসের ৮৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,
كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ إلا ملكه, ويقال: إلا ما أُريد به وجه الله
…
…
…
আপনার আক্বিদার জ্ঞানের উৎস কি এই ধরনের ব্লগ পোস্ট?
http://www.somewhereinblog.net/blog/Ochenahappy/29933199
ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী এবং আল্লামা মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখের উক্তিঃ
শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানীর দৃষ্টিতে একটা হাদিস সহীহ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিস তাকে সহীহ বলায় তিনি হাদীসের বিখ্যাত তিন মুহাদ্দিস ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে বলেছেন,
وقال الحاكم : ” صحيح الاسناد ” ! ووافقه الذهبي ! وأقره المنذري في ” الترغيب ” ( ৩ / ১৬৬ ) ! وكل ذلك من إهمال التحقيق ، والاستسلام للتقليد ، وإلا فكيف يمكن للمحقق أن يصحح مثل هذا ا لاسناد
“হাকেম বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম যাহাবী তাঁর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। ইমাম মুনযিরি (রহঃ) “তারগীব ও তারহীব” নামক কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর এটি হয়েছে, তত্ত্ব-বিশ্লেষণের প্রতি উদাসীনতা, তাকলীদের প্রতি আত্মসমর্পণ (অন্ধানুকরণ), নতুবা একজন বিশ্লেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে সহীহ বলতে পারেন”
হাফেয তাজুদ্দিন সুবকী (রহঃ) সম্পর্কে শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী মন্তব্য করেছেন-
ولكنه دافع عنه بوازع من التعصب المذهبي ، لا فائدة كبرى من نقل كلامه وبيان ما فيه من التعصب. .
মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামি তাঁকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উপকারিতা নেই।
[সিল-সিলাতুজ যয়িফা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৫]
….
….
….
আপনার আক্বিদার জ্ঞানের উৎস কি এই ধরনের ব্লগ পোস্ট?
http://www.somewhereinblog.net/blog/Ochenahappy/29933199
সালাফীর ভিত্তি স্তম্বের কি অবস্হা দেখুন জাবির ভাই
হাদীস গবেষণায় আলবানী সাহেবের চালাকী-১
হাদীস গবেষণায় আলবানী সাহেবের চালাকী-১
হাদীসের তাহকীকের নামে নাসিরুদ্দীন আলবানী সাহেব যে প্রতারণা ও বিকৃতির আশ্রয় নিয়েছেন তা মুসলিম উম্মাহের জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। একই হাদীসকে এক কিতাবে সহীহ বলেছেন আরেক কিতাবে বলেছেন জয়ীফ। আবার হাদীস বিশারদদের গবেষণা মতে সহীহ হাদীসকে বলেছেন জয়ীফ আবার জয়ীফ হাদীসকে বলেছেন সহীহ। এরূপ বাস্তবতা এক জায়গায় নয়। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কিতাবে। আলবানী সাহেবের সমসাময়িক হাদীস গবেষকগণ আলবানী সাহেরব এরূপ প্রতারণা ও ধোকা চিহ্নিত করেছেন হাজার হাজার স্থানে। আমি এখানে কিছু হাদীস বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করব যাদেরকে হাদীস বিশারদ গণ জয়ীফ বলেছেন কিন্তু আলবানী সাহেব তাদেরকে নির্ভরযোগ্য বলে মত প্রকাশ করে তাদের বর্ণনাকৃত জয়ীফ হাদীসকে সহীহ বানিয়েছেন।
আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে মধু বিক্রেতা সম্পর্কে। জনৈক মধু বিক্রেতা বলেছিলেন এই মধুগুলো একেবারে খাটি সবই আমার নিজ বানানো। হা হা হা। আলবানী সাহেব বা তথাকথিত আহলে হাদীসদের সহীহ হাদীস মানেও তাই। অর্থাৎ হাদীসটি সম্পূর্ণ সহীহ কারণ আমরা নিজে একে সহীর সনদ দিয়েছি। বা একবারে জয়ীফ এখানে কোন ভেজাল নেই আমরা নিজেরাই এগুলো তৈরী করেছি। ইসলামের দ্বিতীয় দলীল হাদীস নিয়ে যদি এরূপ লীলা খেলায় মেতে উঠা হয় তবে বুঝা যায় তারা ইসলামের কিভাবে বারোটা বাজাচ্ছে।
…
…
…
আপনার আক্বিদার জ্ঞানের উৎস মনে হচ্ছে এই ধরনের ব্লগগুলো
http://ahnaafbd.wordpress.com/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%B8-%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A6%A3%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC-%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A6%BE/
এই পোস্ট তা যতোবারই পড়ি ততবারই আবার পড়তে ইচ্ছা করে। 🙂
Is it shirk to ask dua to a pious muslim who is alive? Is it shirk to seek companionsip of muttaki and pious Shaikhs to learn the deen and get benefitted from their nasiha? Is it shirk to spend time with pious religious souls whose appearance and advise inspires us to remember Allah Subhan Wa Ta’la? It’s definitely not shirk to benefit from the “sohbat” and “naseeha” of the pious and muttaki people be he an imam or shaikh or a peer. Blindly following such a person at the expense quran and hadith is wrong; considering them capable of mediation in the afterlife without Alla’s permission is shirk; attributing Allah’s quality to them is shirk. There are shaikhs and scholars who make things halal and haram based on their personal opinion and logical deduction without any explicit reference from Kitabullah or Sahih hadith. What will you call it if anybody blindly follows these personal fatwas of the shaikhs?
ইসমা’ঈল (র)……আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন , আমি রাসুলুল্লাহ থেকে দুটি পাত্র মুখস্থ করে রেখেছিলাম। তার একটি পাত্র আমি বিতরণ করে দিয়েছি। আর অপরটি প্রকাশ করলে আমার কন্ঠনালী কেটে দেওয়া হবে। –সহীহ বুখারী শরীফ ১২২।
শরিয়ত, তরিকত, হাকীকত, মারফত। তরিকত, হাকীকত এবং মারফত জ্ঞান লাভের জন্য “পীর” এর কাছে বায়াত হওয়ার কোন বিকল্প নেই। স্বয়ং যিনি নিজেকে সকল ওলীর সর্দার বলে দাবি করতেন, বড় পীর হযরত আব্দুর কাদের জ়্বীলানী (রাঃ)এর ও পীর ছিলেন।
হযরত মূসা (আঃ) কেও সেই গুপ্ত জ্ঞান লাভের জন্য হযরত খিজির (আঃ) এর শিষ্যত্ব গ্রহন করতে হয়েছিল।
হযরত আবু হানিফা (রাঃ) এর ও পীর ছিলেন।
পীর ছাড়া পীর, ধর্মীয় বাঁধন হারা ফকীর।
উপরে বর্নিত, হাদিস এর সেই গুপ্ত জ্ঞান(যে পাত্র প্রকাশ করা হয়নি) হচ্ছে তরিকত, হাকীকত এবং মারফত এর জ্ঞান।যাহা শরিয়তের জ্ঞান দিয়ে ব্যাখা করা কখনো সম্ভব নয়।
“পীর” খুবই পবিত্র একটি শব্দ। একমাত্র আল্লাহর ওলীগনই “পীর” হয়। আর “ওলী” শব্দের অর্থ হচ্ছে আল্লাহর বন্ধু।
মুহাম্মদ ইবন উসমান (র)…আবূ হূরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন, যে ব্যক্তি আমার ওলীর সঙ্গে শত্রুতা রাখবে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করি।আমার বান্দা আমি যা তার উপর ফরয ইবাদতের চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয় কোন ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন করতে থাকবে। এমন কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে সবকিছু দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু সাওয়াল করে, তবে আমি নিশ্চয়ই তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায়, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই।আমি যে কোন কাজ করতে চাইলে এটাতে কোন রকম দ্বিধা সংকোচ করি না, যতটা দ্বিধা সংকোচ মু’মিন বান্দার প্রান হরনে করি। সে মৃত্যুকে অপসন্দ করে আর আমি তার কষ্ট অপসন্দ করি।
আপনার ব্যাখ্যা অনুযায়ী সকল ওলীগন ই শিরক করেছে। যেহেতু সকল ওলীগন-ই কোন না কোন পীর এর মুরিদ।
প্রবৃত্তি নিবৃত্তি ভবে-জান তিন ভাবে
বাক-বিতন্ডা পরিহারে
জানার আগ্রহে,
পরদোষ পরিহারে-নিজ দোষ ধ্যানে।
শুধাইনু সুধিজনে সুধির ভাষণে
না দেখাইবে “পীর” যাকে এই তিন ধারা
আসিবেনা সোজা পথে সেই পথ হারা।
…………ভালো থাকবেন।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। একটু দেখিয়ে দেবেন কোথায় আমি বলেছি সব পীর খারাপ?
আমি চেষ্টা করেছি সেই সব পীরদের কথা বলার, যারা মাজার খুলে ব্যবসা করছে। একিসাথে আমি সেই সব মানসিকতার মানুষদের কথা বলেছি, যারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য পীরের আশ্রয় নেয়।
আর ওলীদের সম্পর্কে আমি কিছু বলিনি। ওলী একটি আপেক্ষিক ধারনা। কিছু মানুষের কাছে যেই বুজুর্গ ওলী, অন্য মাযহাবের মানুষের কাছে সে একজন পথভ্রষ্ট বান্দা। তাই কে ওলী, কে ওলী নন, সেটা আমরা আল্লাহর ﷻ উপরই ছেড়ে দেই।
আসসালামুআলাইকুম মি: ওমর আল জাবির ।
আমি একটি বিষয় ঠিক ভাল ভাবে বুঝতে পারছিনা ।সেটা আপনার কাছ থেকে জানার জন্য বিষয়টা উত্থাপন করছি। আমার জানা মতে আপনি যতেস্ট স্টাডি করেন হাদিস কোরআন সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান রাখেন। সেই হিসাবে আশা করছি সংক্ষিপ্ত পরিসরে উত্তর প্রদান করে আমাকে সহযোগিতা করবেন । বিষয়টা হল ইলমে গায়েব । আমরা কোরআনুল কারিমের অনেক গুলো আয়াত দেখতে পাচ্ছি একমাত্র গায়েবের মালিক আল্লাহ তায়ালা তিনি ব্যাতিথ গায়েব বিষয়ে কেউ কোন জ্ঞান রাখেনা কারো গায়েবের জ্ঞান রাখার সামর্থ ও নাই এটা স্বভাবিক ও স্পষ্ট বিষয় । এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটা কিছু কোরআনুল কারিমের আয়াত কিছু সহি হাদিসে রেওয়াত পুরোপুরি সাংঘর্ষিক মনে হচ্ছে । অথচ কোরআন এবং সহিহ হাদিসগলোতে কোন অবস্তায় সাংঘর্ষিক হবার কথা নয় । সেরকম দুটি হাদিস আমি আপনার নিকট উপস্থাপন করছি । বিষয়টার পরিস্কার ধারনা পাব আশা করছি।
তাফসীরে সাভীতে বণির্ত আছে যে একদিন রাসুল (সা:) বললেন আমার উপর কে কে ঈমান আনবে কে কে ঈমান আনবেনা সেটা আমার রব আমাকে দেখিয়েছেন সে কথাটা যখন মুনাফিকরা শুনল তারা বলল রাসুল (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে যদি আল্লাহ জানিয়ে দেয় তাহলে আমরা যে প্রকৃতপক্ষে ঈমান আনায়ন করি নাই তিনি সেটা বুজতে পারছেনা কেন?
সেকথা যখন রাসুল (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুনলেন তখন বললেন : এই সমস্থ লোকদের (মুনাফিকদের) কি হল যে, তারা আমার জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তোমরা আজকে আমাকে যা জানতে ইচ্ছে করে প্রশ্ন কর । নিম্নে হাদিসগুলো দেওয়া হল
০১। হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বণির্ত আছে যে, তিনি বলেন একদা নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) আমাদের মাঝে তাশরীফ আনলেন তখন সূর্য পশ্চিমাকাশে দিকে ঝুঁকে পড়েছিল ( অর্থাৎ যোহরের নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল ) অতঃপর নবী করীম(সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যোহরের নামায পড়লেন আর সালাম ফিরানোর পর মিম্বরে আরোহন করে ক্বিয়ামতের আলোচনা রাখলেন এবং ক্বিয়ামতের পুর্বেকার কতিপয় বড় বড় ঘটনা বর্ননা দিলেন আর উপস্থিত সাহাবিদেরকে সম্বোধন করে বললেন , খোদার কসম তোমরা আমার কাছে যা কিছু জানতে চাইবে আমি এই মজলিসেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব ।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন হুজুরপাক (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানীর এমন দৃঢ়তা দেখে আনসারী সাহাবাদের মধ্যে আনন্দের কান্নার রোল বয়ে গেলো । আর নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারবার বলে যাচ্ছেন তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর । অতঃপর এক ব্যক্তি দাড়িঁয়ে প্রশ্ন করল – হে আল্লাহর রাসুল ! পরকালে আমার ঠিকানা কোথায় হবে ? নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন জাহান্নাম । অত:পর আবদুল্লাহ ইবনে হুযাফা বললেন -ইয়া রাসুল (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার পিতা কে ? নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন – তোমার পিতা হুযাফা । নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার ও জোর তাগিদ দিয়ে বললেন , তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর , প্রশ্ন কর ।
অত:পর হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বরাবর সামনে গিয়ে বসলেন আর বললেন -আমরা সন্তুষ্ট আল্লাহ কে রব হিসাবে পেয়ে , ইসলাম কে দ্বীন হিসাবে আর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রাসুল হিসেবে পেয়ে । তিনি এসব কথা বলার সময় নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ রইলেন । অতঃপর বললেন -সেই সত্তার কসম ! যার হাতে আমার প্রান , আমার এ দেয়ালের সামনে এই মাত্র বেহেসত ও দোযখ হাজির করা হয়েছে , যখন আমি নামায পড়ছিলাম আজকের মত কোন ভাল এবং মন্দকে আমি আর এভাবে দেখিনি ।
(সুত্র বুখারী শরীফ হাদীস নং৬৮৬৪ কিতাবুল ই’তিসাম , বিল কিতাবে ওয়াস সুন্নাহ :, মুসলিম শরীফ হাদিস নং ২৩৫৯ )
০২। হযরত আমর ইবনে আখতাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্নিত , তিনি বলেন , আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন । অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘ বক্তব্য প্রদান করলেন ; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন ।অতঃপর আবারো আরোহন করলেন মিম্বরে , আর বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন ,এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল । অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরও পড়লেন । পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতে সুর্য অস্তমিত হয়ে গেল । সে দিন নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অতীতে যা কিছু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন । আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব (অদৃশ্য) সংবাদ বেশী মনে রাখতে পেরেছেন ।
( সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিস নম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিস নম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তিরমিযী শরীফ হাদিস নম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর ৪২৮ কিতাবুল ফিতাম , মিসকাতুল মাসাবিহ : কিতাবুল ফিতাম ৪৬১ পৃষ্ঠা )
কেউ যদি কাউকে তাবিজ দারা ক্ষতি করে তা প্রতিহত করার জন্যে কি তাবিজ ব্যবহার করা যায়েজ আছে? দয়া করে উত্তর টা দিবেন ……….
আমার মনে হয় না।।
সাধারণভাবে সবধরনের তাবিজাতকে শিরক বলা সালাফীদের অন্ধ অনুকরণ ছাড়া আর কিছু নয়।
তাবিজ জায়েজ হওয়ার পক্ষে আহলুস্সুন্নাহ ওয়ালা জামাতের দলীল :
আহলুস সুন্নাহ ওয়ালা জামাতের মতে কুরআনে কারীমের আয়াত, আল্লাহর নাম ইত্যাদি দ্বারা তাবিজ দেয়া জায়েজ। তবে শর্ত হল তাবিজের মধ্যে নিজস্ব ক্ষমত আছে মনে করে তার উপর ভরসা না করা। তাছাড়া কুফুরী কালাম দ্বারা তাবিজ দেয়া বা অর্থ জানা যায়না এমন কালাম দ্বারা তাবিজ দেয়া জায়েজ নয়। (আহসানুল ফাতওয়া, খন্ড ৮, পৃঃ ২৫৫)। তাবিজ জায়েজ হওয়ার পক্ষে অসংখ্য দলীল রয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা গেল।
ইমাম আবু বাকর ইবনে আবী শাইবাহ ‘মুনান্নাফ’ গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন, আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (স.) ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে, সে যেন ******** দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন। এই হাদীসটি ইমাম আবূদাউদ (রাহ.) তাঁর সুনানে আবূ দাউদের কিতাবু-তিব্বের **** অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন।
উপরোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল-তাবিজ দেয়া জায়েজ। যদি শিরক হত তাহলে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) এর মত বিখ্যাত বুযুর্গ সাহাবী তাবীজ লিখে ছোট ছোট শিশুদের গলায় লটকিয়ে দিতেন না। বিধায় কোন হাদীস পেলেই তার ব্যাখ্যা, মর্মার্থ, প্রয়োগ স্থল না বুঝে কোন কিছুর ব্যাপারে শিরকের সার্টিফিকেট লাগানো আদৌ ঠিক নয়।
‘ইবনে আবী শাইবাহ মুজাহিদ (রাহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, মুজাহিদ (রাহ.) লোকদের জন্য তাবিজ লিখে তাদের গলায় লটকিয়ে দিতেন। এ মত তিনি আবু জাফর, মুহাম্মদবিন সীরিন, উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর এবং যাহহাক প্রমুখ থেকে লটকানো, অথবা হাতে বাঁকানো বৈধ মনে করতেন।’
উপরে যেসব তাবিয়ীর কথা বলা হলো তারা বিখ্যাত সর্বজন অনুসৃত। এসব তাবিয়ীদের থেকেও কি শিরকের কল্পনা করা যায়? না এসব দুনিয়া বিখ্যাত মুহাদ্দিস তাবিয়ীগণ লেখক কর্তৃক উদ্ধৃত হাদীসগুলো সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন?
বিপদ আসার পর যা লটকানো হয় তা তামীমা (অর্থাৎ নাজায়েজ তাবীজ) এর অন্তর্ভূক্ত নয়।
# সর্বজন মান্য বিশেষত: সালাফিরা যার পদে পদে অনুসরণ করে সেই ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহ.) এর দৃষ্টিতেও তাবিজ-কবচ বৈধ। তিনি ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়ার ১৯নং খন্ডের ৬৪ নং পৃষ্ঠায় লিখেন, বিপগ্রস্থ বা অসুস্থ লোকদের জন্য কালি দ্বারা আল্লাহর কিতাব লিখে তাবিজ দেয়া এবং ধুয়ে পান করানো জায়িজ।
উক্ত আলোচনার শেষদিকে আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রাহ.) তাবিজাত বৈধ হওয়ার পক্ষে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) এর একটি আছর পেশ করেন। ইবনে আব্বাস (রা.) কাগজের টুকরায় তাবিজ লিখে দিতেন, তা সন্তানসম্ভবা নারীদের বাহুতে বেঁধে দেয়া হত।
# হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফকীহ, আল্লামা শামী (রাহ.) লিখেন, নাজায়িজ তাবিজ হল ঐ সব তাবিজ যা কুরআন বহির্ভূত। (রাদ্দুল মুহতার, খন্ড ৫, পৃ: ২৩২)। অতপর তিনি আরোও লিখেন, কুরআনে কারীম দ্বারা অথবা আল্লাহর নাম দ্বারা তাবিজ লিখলে কোন অসুবিধা নেই। (রাদ্দুল মুহতার, খন্ড ৬, পৃ:৩৩৬)। তাছাড়া আল-মুজামুল ওসীত, আল-কামূসুল ওজীয, মিসবাহুল লুগাত, আল-মানার ইত্যাদি প্রামান্য আরবী অভিধাগুলোতে শব্দের অর্থ বলা হয়েছেন মন্ত্র, ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ। যদি
শব্দের অর্থ তাবিজ মানা যায় তাহলে তাবিজ বৈধ হওয়ার পক্ষে মারফু হাদীসের অভাব হবেনা।
লেখাটি ভালো লাগলো।
ami indian pore bhalo lag lo. …….
ইসলাম ডেস্ক: হযরত আনাস (রা:) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন মুমিনগণকে (হাশরের ময়দানে স্ব স্ব অপরাধের কারণে) বন্দী রাখা হবে। তাতে তারা অত্যন্ত চিন্তিত ও অস্থির হয়ে পড়বে এবং বলবে, ‘যদি আমরা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট কারো মাধ্যমে সুপারিশ কামনা করি, যিনি আমাদের বর্তমান অবস্থা থেকে স্বস্তি দিবেন’।সেই লক্ষ্যে তারা আদম (আঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলবে, ‘আপনি মানবজাতির পিতা আদম, আপনাকে আল্লাহ্ নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন, জান্নাতে বসবাস করিয়েছেন, ফেরেশতা মন্ডলীকে দিয়ে আপনাকে সিজদা করিয়েছিলেন এবং তিনিই যাবতীয় বস্তুর নাম আপনাকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। আপনি আমাদের জন্য আপনার রবের নিকট সুপারিশ করুন, যেন তিনি আমাদেরকে এই কষ্টদায়ক স্থান হ’তে মুক্ত করে প্রশান্তি দান করেন’।তখন আদম (আঃ) বলবেন, ‘আমি তোমাদের এই কাজের মোটেই উপযুক্ত নই’। নবী করীম (সাঃ) বলেন, তখন তিনি গাছ হ’তে ফল খাওয়ার অপরাধের কথা স্মরণ করবেন, যা হ’তে তাঁকে নিষেধ করা হয়েছিল। [আদম (আঃ) বলবেন] ‘বরং তোমরা মানবজাতির জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার প্রেরিত সর্বপ্রথম নবী নূহ (আঃ)-এর নিকট যাও’। তারা নূহ (আঃ)-এর কাছে গেলে তিনি তাদেরকে বলবেন, ‘আমি তোমাদের এ কাজের জন্য একেবারেই যোগ্য নই’। সাথে সাথে তিনি তাঁর ঐ অপরাধের কথা স্মরণ করবেন, যা অজ্ঞতাবশত: নিজের (অবাধ্য) ছেলেকে পানিতে না ডুবানোর জন্য আল্লাহ্ কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। (তিনি বলবেন) ‘বরং তোমরা আল্লাহ্ খলীল হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর নিকটে যাও’। রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেন, এবার তারা হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর নিকটে যাবে। তখন তিনি বলবেন , ‘আমি তোমাদের এ কাজের জন্য কিছুই করার ক্ষমতা রাখি না’। সাথে সাথে তাঁর তিনটি মিথ্যা উক্তির কথা স্মরণ করবেন এবং বলবেন, ‘বরং তোমরা মূসা (আঃ)-এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহ্র এমন এক বান্দা, যাকে আল্লাহ্ তাওরাত দান করেছেন, তার সাথে বাক্যালাপ করেছেন এবং গোপন কথাবার্তার মাধ্যমে তাঁকে নৈকট্য দান করেছেন’। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তখন তারা সকলে হযরত মূসা (আঃ) এর নিকটে আসলে তিনি বলবেন, ‘আমি তোমাদের জন্য সুপারিশের ক্ষেত্রে অপারগ’।তখন তিনি সেই প্রাণনাশের অপরাধের কথা স্মরণ করবেন, যা তাঁর হাতে সংঘটিত হয়েছিল এবং বলবেন, ‘বরং তোমরা আল্লাহ্র বান্দা ও তাঁর মনোনীত রাসূল, তাঁর কালেমা ও রূহ হযরত ঈসা (আঃ)-এর কাছে যাও’।নবী করীম (সাঃ) বলেন, তখন তারা সবাই হযরত ঈসা (আঃ)-এর কাছে গেলে তিনি বলবেন, ‘আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই।বরং তোমরা মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর কাছে যাও।তিনি আল্লাহ্ তা‘আলার এমন এক বান্দা, যার আগের ও পরের সমস্ত গোনাহ আল্লাহ্ ক্ষমা করে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘তারা আমার কাছে আসবে।আমি তখন আমার রবের কাছে তাঁর দরবারে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করব।অতঃপর আমাকে তাঁর নিকট যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।আমি যখন তাঁকে দেখব, তখনই তাঁর উদ্দেশ্যে সিজদায় পড়ে যাব।আল্লাহ্ আমাকে যতক্ষণ চাইবেন সিজদা অবস্থায় রাখবেন’।অতঃপর বলবেন, ‘হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও।আর যা বলার বল, তোমর কথা শুনা হবে। শাফা‘আত কর, কবুল করা হবে।তুমি চাও, তোমাকে দেওয়া হবে’। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘তখন আমি মাথা উঠাব এবং আমার রবের এমনভাবে প্রশংসা বর্ণনা করব, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দিবেন। অতঃপর আমি শাফা‘আত করব। তবে এ ব্যাপারে আমার জন্য একটি সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।তখন আমি আল্লাহ্র দরবার হতে উঠে আসব এবং ঐ নির্ধারিত সীমার লোকদেরকে জাহান্নাম হ’তে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাব।তারপর আমি পুনরায় ফিরে এসে আমার প্রতিপালকের দরবারে হাযির হওয়ার জন্য আল্লাহ্ কাছে অনুমতি প্রার্থনা করব।আমাকে অনুমতি দেওয়া হবে।আমি যখন তাঁকে দেখব, তখনই তাঁর উদ্দেশ্যে সিজদায় পড়ে যাব এবং আল্লাহ্ যতক্ষণ চাইবেন আমাকে সিজদা অবস্থায় থাকতে দিবেন’। তারপর আল্লাহ্ বলবেন, ‘হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। আর যা বলার বল, তোমার কথা শুনা হবে, সুপারিশ কর, কবুল করা হবে। তুমি প্রার্থনা কর, যা প্রার্থনা করবে তা দেওয়া হবে’। রাসূল (সাঃ) বলেন, তখন আমি মাথা উঠাব এবং আমার রবের এমনভাবে প্রশংসা ও গুণকীর্তন বর্ণনা করব, যা আমাকে শিখিয়ে দেওয়া হবে। এরপর আমি শাফা‘আত করব। তবে এ ব্যাপারে আমার জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। তখন আমি আমার রবের দরবার হ’তে উঠে আসব এবং ঐ নির্দিষ্ট লোকগুলিকে জাহান্নাম হ’তে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাব। অতঃপর তৃতীয়বার ফিরে আসব এবং আমার প্রতিপালক আল্লাহ্র দরবারে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করব। আমাকে তাঁর কাছে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। আমি যখন তাঁকে দেখব, তখনই সিজদায় পড়ে যাব।আল্লাহ্ যতক্ষণ ইচ্ছা আমাকে সিজদা অবস্থায় য় রাখবেন’। তারপর বলবেন, ‘হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও।তুমি যা বলবে তা শুনা হবে, সুপারিশ কর, কবুল করা হবে।প্রার্থনা কর, তা দেওয়া হবে’। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘তখন আমি মাথা উঠাব এবং আমার রবের এমন হামদ ও ছানা বর্ণনা করব, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দিবেন’। নবী করীম (সাঃ) বলেন, ‘তারপর আমি শাফা‘আত করব।এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে দিবেন। তখন আমি সেই দরবার থেকে বের হয়ে আসব এবং তাদেরকে জাহান্নাম হ’তে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাব’। অবশেষে কুরআন যাদেরকে আটকিয়ে রাখবে (অর্থাৎ যাদের জন্য কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী চিরস্থায়ী ঠিকানা জাহান্নামে নির্ধারিত হয়ে গেছে) তারা ব্যতীত আর কেউ জাহান্নামে অবশিষ্ট থাকবে না। বর্ণনাকারী ছাহাবী হযরত আনাস (রা:) বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কুরআনের এই আয়াতটি ‘আশা করা যায়, আপনার প্রতিপালক অচিরেই আপনাকে ‘মাকামে মাহমূদে’ পৌঁছিয়ে দেবেন’ [বনী ইসরাঈল ৭৯] তেলাওয়াত করলেন এবং বললেন, এটাই সেই ‘মাকামে মাহমূদ’ যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের নবীকে দেওয়া হয়েছে [ ছহীহ বুখারী হা/৭৪৪০ ‘তাওহীদ’অধ্যায়, অনুচেছদ-২৪, মিশকাত হা/৫৫৭২ ‘কিয়ামতের অবস্থা ও সৃষ্টির সূচনা’অধ্যায়, ‘হাওযে কাওছার ও শাফা‘আত’অনুচেছদ] ২৩ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ