কু’রআনে কি ধরণের বৈজ্ঞানিক তথ্য দেওয়া আছে

যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে নিখুঁত করেছেন এবং মানবজাতির সৃষ্টির সূচনা করেছিলেন পানিসিক্ত অজৈব পদার্থ থেকে। (৩২:৭)

crab-nebula - after supernova explosionকু’রআনে পৃথিবী, সৌরজগত, মহাবিশ্ব এবং সৃষ্টির সূচনার যে বর্ণনা দেওয়া আছে তা সম্পর্কে ১৪০০ বছর আগে মানুষের কোনই ধারনা ছিল না। কু’রআন এমন একটি সময়ে প্রকাশ করা হয়েছে যখন কোন পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান – কিছুই ছিল না। মানুষ মনে করতো পৃথিবী হচ্ছে একমাত্র জগত এবং আকাশ হচ্ছে পৃথিবীর ছাদ যেখানে চাঁদ, সূর্য, নক্ষত্র ভেসে বেড়াচ্ছে এবং রাতের বেলা সূর্য পৃথিবীর নিচে গিয়ে বিশ্রাম নেয় (গ্রীক হেলিওসেন্ট্রিসম, সাহিহ মুসলিম ১:০২৯৭)। অথচ কু’রআন, যা কিনা ৬১০-৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নাজিল হয়েছে, এখন থেকে ১৪০০ বছর আগে এমন কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রকাশ করেছে, যা শুধুমাত্র সাম্প্রতিক বিজ্ঞানই সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করতে পেরেছে। কু’রআনে যে অগনিত বৈজ্ঞানিক তথ্যে ভরা আয়াত পাওয়া গেছে তা সব একসাথে করতে গেলে একটা বই লিখতে হবে। তাই আমি কিছু চমকপ্রদ আয়াত এবং সেগুলোতে কিধরনের বৈজ্ঞানিক/ঐতিহাসিক/গাণিতিক পাওয়া গেছে তা তুলে ধরলাম। বিস্তারিত জানতে quranmiracles.com দেখুন।

সৃষ্টি তত্ত্ব

  • আল্লাহ সব কিছুর সৃষ্টি করেছেন শূন্য থেকে – ২:১১৭।
  • পৃথিবী এবং মহাকাশ/বায়ুমণ্ডল একসময় একসাথে মিলিত ছিল এবং তা আলাদা করা হয়েছে বিশাল শক্তি দিয়ে – ২১:৩০।
  • পানি থেকে সকল প্রাণ তৈরি হয়েছে – ২১:৩০।
  • মহাবিশ্ব ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে – ৫১:৪৭।
  • মহাবিশ্ব ছয়টি পর্যায়ে তৈরি হয়েছে এবং প্রাণ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি হয়েছে চারটি পর্যায়ে – ৫০:৩৮, ৪১:১০।
  • প্রতিটি প্রাণীর সৃষ্টি হয় নিয়ন্ত্রিত বিবর্তনের মাধ্যমে – ৭:৬৯, ১৫:২৮, ২৪:৪৫, ৩২:৭, ৭১:১৪।
  • মানুষের সৃষ্টির সুচনা হয়েছিল পানিসিক্ত অজৈব পদার্থ (কাঁদা) থেকে – ৩২:৭, ১৫:২৬।
  • পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে/বায়ুমন্ডলে প্রাণ আছে – ৪২:২৯। গত বছর বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছেন মেঘে অত্যন্ত উচুতেও বিপুল পরিমাণে অতি ক্ষুদ্র কীটাণু আছে।

মহাকাশ বিজ্ঞান

  • সূর্য পূর্ব দিকের দুটি প্রান্তে উঠে এবং পশ্চিম দিকের দুটি প্রান্তে অস্ত যায় – ৫৫:১৭, ৭০:৪০, ৩৭:৫।
  • পৃথিবী নিজস্ব অক্ষে ঘুরছে – ২৭:৮৮, ২১:৩৩, ৩৬:৪০।
  • সূর্যের নিজস্ব অক্ষ রয়েছে, এটি গ্যালাক্সিকে কেন্দ্র করে ঘুরে – ৩৬:৪০, ২১:৩৩।
  • পৃথিবী সম্পূর্ণ গোল নয় বরং তা ডিমের মত উপরে নিচে চ্যাপ্টা – ৭৯:৩০, ৩৯:৫।
  • প্রথমে মহাকাশে সবকিছু ছিল ধোঁয়া, তারপর অভিকর্ষের প্রভাবে তা একত্র হয়ে পৃথিবীর মত গ্রহের জন্ম দিয়েছে – ৪১:১১।
  • পৃথিবীর সমস্ত পানি এসেছে মহাকাশ থেকে, পরিমিত ভাবে – ২৩:১৮। ধারণা করা হয় ধুমকেতু এবং উল্কার মাধ্যমে আদি পৃথিবীতে পানি এসেছে।
  • চাঁদ এবং সূর্যের আকৃতি এবং দূরত্ব সুনিয়ন্ত্রিত – ৫৫:৫। সূর্য চাঁদ থেকে ৪০০ গুণ বড় এবং চাঁদ পৃথিবী থেকে যত দূরে, সূর্য তার ৪০০ গুণ বেশি দূরে। একারনেই পূর্ণ সূর্য গ্রহন হয়। সূর্য যদি এর থেকে কাছে বা চাঁদ যদি এর থেকে দূরে হত, অথবা চাঁদ ছোট হত বা সূর্য যদি আরও বড় হত, তাহলে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হত না।
  • মহাকাশের সম্প্রসারণের গতি যদি আলোর গতি থেকে বেশি না হত, তাহলে কখনও রাত হত না কারন রাতের আকাশের প্রতিটি বিন্দুতে কোন না কোন নক্ষত্র বা গ্যলাক্সি থেকে আলো পৃথিবীতে এসে পৌঁছাত এবং রাতের আকাশ থাকতো দিনের মত জ্বলজ্বলে – ৩:১৯০।

পদার্থ বিজ্ঞান

  • সময় আপেক্ষিক – ৩২:৫, ৭০:৪, ২২:৪৭।
  • প্রতিটি বস্তু তৈরি হয়েছে জোড়ায় – ম্যাটার এবং এন্টিম্যাটার – ৫১:৪৯।
  • পৃথিবীতে যত লোহা আছে তার সব এসেছে পৃথিবীর বাইরে থেকে – ৫৭:২৫। একমাত্র সুপারনোভার বিস্ফোরণে মহাবিশ্বে লোহা সৃষ্টি হয়, যা উল্কার মাধ্যমে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়।
  • নক্ষত্র যেখানে ধ্বংস হয় – ব্ল্যাকহোল – ৫৬:৭৫।
  • পালসার – যা অতি তীব্র ছিদ্রকারি গামারশ্মি বিচ্ছুরণ করে এবং সেকেন্ডে বহুবার ‘নক’ করে – ৮৬:১-৩।
  • ২০০৬ সালের পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আবিস্কার – মহাবিশ্বের সবকিছু সব জায়গায় সমান ভাবে ছড়িয়ে নেই বরং নির্দিষ্ট কিছু পথে মাকড়সার জালের বুননের মত ছড়িয়ে আছে – ৫১:৭।
  • আগুন জ্বালাবার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন তৈরি করে গাছের সবুজ পাতা – ৩৬:৮০।
  • বৃষ্টির পানির ফোঁটা মাটিতে পড়ে মাটির কণাগুলো আয়নিত করে ফেলে, যার কারনে কণাগুলো “ব্রাউনিয়ান গতি” কারনে স্পন্দন করা শুরু করে। তারপর আয়নিত কণাগুলোর ফাঁকে পানি এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ আকৃষ্ট হয়ে জমা হয় এবং মাটির কণাগুলো ফুলে যায় – ২২:৫।
  • মেঘের পানিতে মৃত জমিকে জীবিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে – ৫০:৯, ২৫:৪৮-৪৯। সমুদ্রের পানির উপরে ০.১ মিলিমিটার মোটা স্তর থাকে যাতে বিপুল পরিমানে জৈব বর্জ্য পদার্থ থাকে, যা মৃত শৈবাল এবং প্ল্যাঙ্কটন থেকে তৈরি হয়। এই বর্জ্য পদার্থগুলো ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, কপার, জিঙ্ক, কোবাল্ট, লেড শোষণ করে। এই স্তরটি পানি বাষ্প হবার সময় পানির পৃষ্ঠটানের কারনে পানির কণার সাথে চড়ে মেঘে চলে যায় এবং বৃষ্টির সাথে বিপুল পরিমাণে পড়ে মাটির পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থগুলো সরবরাহ দেয়।

আবহাওয়া বিজ্ঞান

  • বাতাসের মাধ্যমে মেঘ ছড়ায় এবং মেঘের মাঝামাঝি মেঘের উপর মেঘ স্তরে স্তরে জমা হয়ে বৃষ্টির মেঘ তৈরি হয় – ২৪:৪৩, ৩০:৪৮।
  • মেঘ অত্যন্ত ভারী, একটি বৃষ্টির মেঘ ৩০০,০০০ টন পর্যন্ত ওজন হয় – ১৩:১২, ৭:৫৭।
  • আকাশে অনেক উচ্চতায় উঠার সময় অক্সিজেনের অভাবে শ্বাস কষ্ট হয় এবং বুক সঙ্কীর্ণ হয়ে যায় – ৬:১২৫।
  • আকাশ পৃথিবীর জন্য একটি বর্ম সরূপ যা পৃথিবীকে মহাকাশের ক্ষতিকর মহাজাগতিক রশ্মি থেকে রক্ষা করে – ২১:৩২, ২:২২।
  • আকাশ প্রতিফলন করে – পানি বাস্প হয়ে মহাকাশে হারিয়ে যাওয়া থেকে এবং পৃথিবীকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে – ৮৬:১১।
  • সমুদ্রের নিচে আলাদা ঢেউ রয়েছে, যা উপরের ঢেউ থেকে ভিন্ন – ২৪:৪০।
  • বৃষ্টির পরিমান সুনিয়ন্ত্রিত – ৪৩:১১। পৃথিবীতে প্রতি বছর যে পরিমান বৃষ্টি হয় তার পরিমাণ ৫১৩ ট্রিলিয়ন টন এবং ঠিক সম পরিমান পানি প্রতি বছর বাস্প হয়ে মেঘ হয়ে যায়। এভাবে পৃথিবী এবং আকাশে পানির ভারসাম্য রক্ষা হয়।
  • ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক সাগরের মধ্যে লবনাক্ততার পার্থক্য আছে এবং তাদের মধ্যে একটি লবণাক্ততার বাঁধ রয়েছে যার কারনে আটলান্টিক সাগরের লবনাক্ত পানি ভূমধ্যসাগরের কম লবনাক্ত পানির সাথে মিশে যায় না এবং দুটি সাগরে দুই ধরনের উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বসবাস সম্ভব হয় – ৫৫:১৯-২০।

জীব বিজ্ঞান

  • বাতাস শস্যকে পরাগিত করে – ১৫:২২।
  • মৌমাছির একাধিক পাকস্থলী আছে, কর্মী মৌমাছিরা স্ত্রী, পুরুষ নয়, মধুর অনেক ঔষধি গুণ আছে – ১৬:৬৮-৬৯।
  • গবাদি পশুর খাবার হজম হবার পর তা রক্তের মাধ্যমে একটি বিশেষ গ্রন্থিতে গিয়ে দুধ তৈরি করে যা আমরা খেতে পারি – ১৬:৬৬।
  • স্ত্রী পিপড়া তার পেটের কাছে অবস্থিত একটি অঙ্গ দিয়ে শব্দ করে অন্য পিপড়াদের সাথে কথা বলতে পারে এবং নির্দেশ দেয়, যা সাম্প্রতিক কালে মানুষের পক্ষে যন্ত্র ব্যবহার করে ধরা গেছে – ২৭:১৮।
  • উদ্ভিদের পুরুষ এবং স্ত্রী লিঙ্গ আছে – ১৩:৩।
  • গম শীষের ভেতরে রেখে দিলে তা সাধারন তাপমাত্রায়ও কয়েক বছর পর্যন্ত ভালো থাকে এবং তা সংরক্ষণ করার জন্য কোন বিশেষ ব্যবস্থার দরকার হয় না – ১২:৪৭।
  • উচু ভুমিতে ফুল ও ফলের বাগান ভাল ফসল দেয় কারন উচু জমিতে পানি জমে থাকতে পারেনা এবং পানির খোঁজে গাছের মূল অনেক গভীর পর্যন্ত যায়, যার কারনে মূল বেশি করে মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করতে পারে। তবে শস্য যেমন আলু, গম ইত্যাদি ফসলের জন্য উল্টোটা ভালো, কারন তাদের জন্য ছোট মূল দরকার যা মাটির উপরের স্তর থেকে পুষ্টি নেয় – ২:২৬৫।
  • গাছে সবুজ ক্লোরোফিল রয়েছে – ৬:৯৯।
  • রাত হচ্ছে বিশ্রামের জন্য, আর দিন হচ্ছে কাজের জন্য কারণ দিনের বেলা সূর্যের আলো আমাদের রক্ত চলাচল, রক্তে সুগার, কোষে অক্সিজেনের পরিমাণ, পেশিতে শক্তি, মানসিক ভারসাম্য, মেটাবোলিজম বৃদ্ধি করে– ২৮:৭৩। [সুত্র]

চিকিৎসা বিজ্ঞান

  • মানব শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ হয় পুরুষের বীর্য থেকে – ৫৩:৪৫-৪৬, ৭৫:৩৭।
  • মায়ের গর্ভ শিশুর জন্য একটি সুরক্ষিত জায়গা। এটি বাইরের আলো এবং শব্দ, আঘাত, ঝাঁকি থেকে রক্ষা করে, শিশুর জন্য সঠিক তাপমাত্রা তৈরি করে, পানি, অক্সিজেনের সরবরাহ দেয় – ২০:২৩, ১২:১৪।
  • মায়ের গর্ভে সন্তান কিভাবে ধাপে ধাপে বড় হয় তার নিখুঁত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যা কু’রআনের আগে অন্য কোন চিকিৎসা শাস্ত্রের বইয়ে ছিলনা – ২৩:১৩-১৪। যেমন প্রথমে শিশু একটি চাবানো মাংসের টুকরার মত থাকে, যা ইউটেরাসের গায়ে ঝুলে থাকে, তারপর প্রথমে হাড় তৈরি হয় এবং তারপর হাড়ের উপর মাসল তৈরি হয়, তারপর তা একটি মানব শিশুর বৈশিষ্ট্য পাওয়া শুরু করে।
  • মানব শিশুর প্রথমে শুনতে পায় তারপর দেখতে পায় – ৭৬:২। প্রথমে কান হয়, তারপর চোখ।
  • মানুষের দেহ মৃত্যুর বহু বছর পর পাথরের মত শক্ত ফসিল হয়ে যায় এবং লোহা (পাইরাইট) তৈরি হয় – ৪৯:৫১।
  • মানুষের আঙ্গুলের ছাপ প্রত্যেকের জন্য ভিন্ন – ৭৫:৪।
  • মানুষকে প্রথম ভাষা ব্যবহার করা শেখানো হয়েছে এবং ভাষার জন্য অত্যাবশ্যকীয় স্বরনালী একমাত্র মানুষকেই দেওয়া হয়েছে – ৫৫:৩-৪।

ভূতত্ত্ব/ইতিহাস

  • ইরাম নামে একটি শহরের কথা বলা আছে যেখানে অনেকগুলো পাথরের লম্বা স্তম্ভ আছে, যা কিনা ১৯৯২ সালে চ্যালেঞ্জার মহাকাশ যানের রাডার ব্যবহার করে মাটির নিচ থেকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছে –  ৮৯:৭।
  • মানব সভ্যতার উন্নতি ধারাবাহিক ভাবে হয়নি, বরং আগে কিছু জাতি এসেছিল যারা আমাদের থেকেও উন্নত ছিল, যারা ধ্বংস হয়ে গেছে – ৪০:৮২, ৩০:৯, ২০:১২৮।
  • কু’রআনে ফেরাউনের সময় মিশরে যে সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ, মহামারীর কথা বলা আছে, তা কু’রআন প্রকাশিত হবার হাজার বছর পরে আবিষ্কৃত একটি প্রাচীন হায়ারো গ্লিফিক লিপি ‘ইপুয়ার’-এ হুবহু একই ঘটনাগুলোর বর্ণনা পাওয়া গেছে, যা এর আগে কখনও জানা ছিলনা – ৭:১৩০, ৭:১৩৩, ২৬:৫৭-৫৯।

গাণিতিক তথ্য

  • কু’রআনে ‘একটি দিন’ (ইয়াওম) ঠিক ৩৬৫ বার আছে। এক বছর = ৩৬৫ দিন।
  • চাঁদ (কা’মার) আছে ২৭ বার। চাঁদ ২৭ দিনে একটি চক্র সম্পন্ন করে।
  • ‘একটি মাস’ (সেহর) আছে  ১২ বার। ১২ মাসে এক বছর।
  • ‘ভুমি’ (আল-বের) ১২ বার এবং ‘সমুদ্র’ (আল-বাহর) ৩২ বার। ১২/৩২ = ০.৩৭৫। পৃথিবীতে ভুমির মোট আয়তন ১৩৫ মিলিয়ন বর্গ কিমি, সমুদ্র ৩৬০ মিলিয়ন বর্গ কিমি। ১৩৫/৩৬০ = ০.৩৭৫।
  • দুনিয়া ১১৫ বার এবং আখিরাত ঠিক ১১৫ বার আছে।
  • শয়তান এবং ফেরেস্তা ঠিক ৮৮ বার করে আছে।
  • উন্নতি (নাফ) এবং দুর্নীতি (ফাসাদ) ঠিক ৫০ বার করে আছে।
  • বল (কু’ল) এবং ‘তারা বলে’ (কা’লু) ঠিক ৩৩২ বার করে আছে।
  • এরকম অনেক গুলো সমার্থক এবং বিপরীতার্থক শব্দ কু’রআনে ঠিক একই সংখ্যক বার আছে। এতগুলো গাণিতিক সামঞ্জস্য বজায় রেখে সাড়ে ছয় হাজার বাক্যের একটি  গ্রন্থ যিনি তৈরি করেন, তিনি নিঃসন্দেহে এক মহান গণিতবিদ, যিনি মানুষকে গণিতের প্রতি মনোযোগ দেবার জন্য যথেষ্ট ইংগিত দিয়েছেন।

কিভাবে দিন, মাস,  ভুমি ও পানির অনুপাত ইত্যাদি গোণা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিঃদ্রঃ প্রচলিত বাংলা অনুবাদগুলোতে এমন সব বাংলা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যা পড়লে আপনার কাছে কোনভাবেই মনে হবে না যে আয়াতগুলোতে কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য আছে। যেমন মৌমাছি এবং পিপড়ার বেলায় যে আল্লাহ স্ত্রী লিঙ্গ ব্যবহার করেছেন তা বেশিরভাগ অনুবাদকই লক্ষ্য করেন নি। আবার যেমন আল্লাহ “সবকিছু” (“সবাইকে” নয়) জোড়ায় তৈরি করেছেন, জীব নয়, জড় পদার্থকে (ম্যাটার – এন্টি ম্যাটার), সেটা তারা লক্ষ্য করেন নি। মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে “কাঁদা” থেকে যেখানে কাঁদা হচ্ছে পানি সিক্ত মাটি এবং আদি মাটি ছিল অজৈব পদার্থের মিশ্রণ, সুতরাং কাঁদা = পানিসিক্ত অজৈব পদার্থ। বাংলা অনুবাদকেরা এই খুঁটিনাটি ব্যপারগুলো লক্ষ্য করেন নি যে বিশেষ কিছু আরবি শব্দের যে অর্থগুলো তাদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে সেগুলোই সঠিক, তা তাদের সীমিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অনুসারে যতই অবাস্তব মনে হোক না কেন। তাই পাঠকদেরকে অনুরোধ করবো সাম্প্রতিক ইংরেজি অনুবাদগুলো পড়তে, যেগুলোতে উপরোক্ত আয়াতগুলোর সঠিক অনুবাদ করা হয়েছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হল – কু’রআনের ভাষা কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধের ভাষা নয়, এটি কোন বৈজ্ঞানিক রিসার্চ পেপার নয়। মানুষ যেভাবে দেখে, শুনে, অনুভব করে, আল্লাহ কু’রআনে সেই পরিপ্রেক্ষিতে বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো প্রকাশ করেছেন। তাই যারা কু’রআনের বর্ণনাগুলোকে বৈজ্ঞানিক ভাষার মাপকাঠিতে যাচাই করতে যাবেন, তারা ভুল করবেন। আল্লাহ কু’রআনে এমন সব শব্দ ব্যবহার করেছেন যেগুলো ১৪০০ বছর আগে বিজ্ঞান সম্পর্কে কোনই ধারণা নেই এমন মানুষরাও বুঝতে পারবে এবং একই সাথে বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানিরাও সেই শব্দগুলোকে ভুল বা অনুপযুক্ত বলে দাবি করতে পারবে না।

নিশ্চয়ই আকাশগুলো এবং পৃথিবীর সৃষ্টি এবং দিন-রাতের আবর্তনে বুদ্ধিমানদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে। (৩:১৯০)

 

By ওমর আল জাবির

কু'রআনকে গভীরভাবে ভালবাসি। সত্যকে জেনে, তা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে অন্যদেরকে অনুপ্রেরণা দেবার চেষ্টা করি।

9 comments

  1. ভাই ; এই পোস্টটার ইংরেজি অনুবাদ দিলে একটু ভালো হতো ।
    বাইরের কিছু ফ্রেন্ড আছে ; ওদের সাথে শেয়ার করতাম ।

  2. মানব সভ্যতার উন্নতি ধারাবাহিক ভাবে হয়নি, বরং আগে কিছু জাতি এসেছিল যারা আমাদের থেকেও উন্নত ছিল, যারা ধ্বংস হয়ে গেছে – ৪০:৮২, ৩০:৯, ২০:১২৮। vaia ai post tar smndhe bistarito jante chai. Amader theke unnoto jara chilo tara ki vbe dhongsho hlo?

  3. Onek bhalo laglo pore. (الحمد لله) . Ami onek ‘Q’uran’ er copy kucchi kintu khub bhalo kore anubad kora kono copy paini. Apnar janamote emon kono copy ki ache jekhane khub details e sob kichu dea ache ?

  4. Assalamu aalaikum….Chad ebong shurjer Dara kivhabe month,Reetu,ebong din,nirnoi kora jabe ei quran,hadiser aloke ekta boi dorkar jodi ekta link den,na hoi book name.jajakumulla kumullah khairan

  5. astronomical shombondhe r ekta boi dorkar.jetate bistarito alochona kora hoieche

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.