এই রমজানে আমি কু’রআনের উপর একটা কোর্স করছি যেখানে ৪ দিনে পুরো কু’রআনের মূল বিষয়গুলোর উপর একটা ধারণা দেওয়া হবে। প্রায় ৩০০ জন আগ্রহী শিক্ষাত্রী, যার মধ্যে ৯৫% তরুণ-তরুণী, সারা দিন রোযা রেখে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৬:৩০ পর্যন্ত কোর্সটা করছে, অলিম্পিক দেখা বাদ দিয়ে। আমাদের এখানে রোযা বাংলাদেশের মত মজার রোযা না। আমরা রাত তিনটার দিকে সেহরি খাই এবং ইফতার করি রাত নয়টার দিকে – ১৮ ঘণ্টার রোযা। এই চরম গ্রীষ্ম কালে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই রোযা রেখে যারা ৪ দিন এই কোর্সটা করছে তারা আর কিছু না হোক, নিঃসন্দেহে চরম পর্যায়ের ঈমানের অধিকারী এবং নিশ্চয়ই দিন রাত কু’রআন পড়ে। তাই কোর্সের বিরতির ফাঁকে ফাঁকে আমি তাদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেই এবং তাদের সবাইকে একটা সাধারণ প্রশ্ন করিঃ
ভাই, আপনি কি কু’রআন পুরোটা একবার পড়ে দেখেছেন?
উত্তর হয় দুই ধরনেরঃ
- না ভাই, আমার এখনও পুরোটা পড়া হয় নি।
অথবা,
- অবশ্যই, আমি বহুবার পড়েছি।
- আরবিতে না ইংরেজিতে?
- আরবিতে।
- মাশা আল্লাহ, আপিনি আরবি বোঝেন?
- না।
আমি অনেককেই জিগ্যেস করেছি কেন তারা বুঝে কু’রআন পড়ে না? মোটামুটি সবার একই উত্তরঃ কু’রআন (বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ) পড়তে ভালো লাগে না। পড়ে কোন মজা পাই না। এক পাতা পড়ার পর হয় মাথা গরম হয়ে যায়, নাহলে ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আমারও এরকম হত। আমি নিজেও যখন প্রথম কু’রআন পড়া শুরু করি, তখন এক নাগারে খুব বেশি হলে ১০ মিনিট ধৈর্য ধরে রাখতে পারতাম। তারপর রেখে দিতাম। সেই দশ মিনিটের মধ্যেও কয়েক বার কোন এসএমএস এসেছে কিনা দেখতাম, ফেইসবুকে কেউ “আমি আজকে খুব সুন্দর একটা ঘুম দিয়েছি” এই ধরণের ফালতু স্ট্যাটাস আপডেট আসলো কিনা দেখতাম, অন্তত দশ বার জিমেইলে রিফ্রেস চেপে দেখতাম যদি চেপে চেপে একটা নতুন মেইল বের করতে পারি ইত্যাদি। আমাকে যদি কেউ জিগ্যেস করত কোন বইটা পড়তে তোমার সবচেয়ে বিরক্তি লাগে, অন্য দশ জন মুসলমানের মত মিথ্যা কথা বলতাম – পড়ার বই। সত্যি ঘটনা ছিল – কু’রআন, এর চেয়ে বিরক্তিকর বই আর কিছু ছিলনা।
আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে আমরা পার্কে নিয়ে যাই, একসাথে বসে টিভি দেখি, গেম খেলি, রেস্টুরেন্টে খাই, গল্পের বই পড়ি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেহুদা মার্কেটে ঘুরে বেরাই। কিন্তু আমরা দশ মিনিটও নিজেদের সন্তারদেরকে নিয়ে বসে কু’রআন পরে শোনাই না। কু’রআন পড়ার জন্য টাকা খরচ করে শিক্ষক রেখে দেই, মাদ্রাসায় পাঠাই, কিন্তু নিজেরা কখনও কু’রআন হাতে নিয়ে ছেলে মেয়েদেরকে তা পরে শোনাবার, কু’রআনের রোমহর্ষক ঘটনাগুলো হাড় নেড়ে বোঝাবার চেষ্টা করি না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা আমাদেরকে দেখে ভাবে যে – আমার বাবা-মা আমাকে নিয়ে বাইরে খেতে যায়, টিভি দেখে, আই-ফোনে গেম খেলে, স্কুলের পড়া দেখায় সবকিছুই করে, কিন্তু তারা কখনই যে কাজটা করে না তা হচ্ছে – তারা নিজেরা কু’রআন হাতে নিয়ে পড়েনা এবং আমাকে কখনও পড়ে শুনায় না। এধরনের একটা কাজ করে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে কি ম্যাসেজ দেই?
আমাদের স্কুল জীবনে দশ বছরে আমরা প্রায় ৮০টা টেক্সট বই পড়ি। এর সাথে আরও ৫০টা পাঞ্জেরি গাইড পড়ি। কলেজে উঠে আরও ২০টা এবং ইউনিভারসিটিতে আরও ৩০টার মত বই পড়া হয়। মোটমাট ১৫০টার মত টেক্সট বই, শখানেক গল্পের বই, ম্যাগাজিন ইউনিভারসিটি পাস করতে গিয়ে আমাদের সবারই পড়া হয়। অথচ পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণও যেই বইটা, যেটার লেখক সর্বকালের বেস্ট সেলার, যিনি স্টিফেন হকিং থেকেও বড় “বিজ্ঞানী”, রবিন্দ্রনাথ থেকেও বড় “সাহিত্যিক”, গস/অয়লার থেকেও বড় “গণিতবিদ” – তাঁর লেখা একটা মাত্র বই আমাদের পড়ার সময় হয় না। যেই বই না পড়লে আমাদের বেঁচে থাকাটা অর্থহীন, মারা যাওয়াটা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল, যে বইয়ে আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সব সমস্যার সমাধান দেওয়া আছে – সেটা না আমরা নিজেরা পড়ি, না আমাদের বাবা-মা আমাদেরকে পড়ার জন্য কোচিং সেন্টারে জোর করে পাঠান। আমরা অনেকেই মিউজিক্যাল নোটের মত একটি বিদেশি অক্ষরে সুর করে সেই বইয়ের শব্দগুলো গুন গুন করা শিখি, কিন্তু সেই বইয়ের যে প্রকৃত বাণী, যা আমাদেরকে শেখানোর জন্য সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানুষটি ২৩ বছর চরম সংগ্রাম করেছেন, মানুষের গালি খেয়েছেন, নির্যাতনে জ্ঞান হারিয়েছেন, যেই জ্ঞান এবং উপলব্ধি আমাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য হাজারো মানুষ নির্যাতনে, যুদ্ধে জীবন দিয়ে দিয়েছেন – সেটা জানার এবং বোঝার আগ্রহ, সময়, ধৈর্য আমাদের হয় না।
ব্যপারটা এমন না যে আমরা একেবারেই কোন ধরনের ধর্মের বই পড়ি না। আমরা অনেকেই অনেক ধর্মীয় বই পড়ি। বেহেস্তি জেওর, আমলে নাজাত, ফাযায়েলে আমল ইত্যাদি মগজ ধোলাই করা, জাল হাদিস এবং বিদাতে ভরা বই আমরা অনেকেই ছোটবেলায় পড়েছি। বিভিন্ন ধরণের ওয়াজ, হালাকায় গিয়েছি, টিভিতে আলেমদের প্রশ্নোত্তর দেখি, ইউটিউবে লেকচার শুনি। কিন্তু যে ম্যানুয়ালটা আমাদেরকে শেখায় “কিভাবে মুসলমান হওয়া যায়”, সেই সবচেয়ে জরুরি ম্যানুয়াল “কু’রআন’” পড়ার মত সময় আমাদের হয় না।
জীবনের পথ চলায় আমাদের নানা ধরণের প্রশ্ন আশে, নানা ধরণের সমস্যায় পড়ি। তখন আমরা আমাদের বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীকে জিজ্ঞেস করি। তারা যা বলে সেটা শুনে অনুসরণ করি। কিন্তু আমরা কখনও খুজে দেখিনা যে আল্লাহ নিজেই আমাদেরকে সে সব প্রশ্নের উত্তর, সে সব সমস্যা থেকে বের হবার উপায় ইতিমধ্যেই কু’রআনে বলে দিয়েছেন কি না।
কেন আমাদের কু’রআন পড়তে এত অনীহা, এতো বিরক্তি লাগে? যেখানে আমাদের নবী যখন কু’রআন তিলাওয়াত করতেন তখন কাফেররা, যারা কিনা নবীকে রাস্তায় একা পেলে মেরে ফেলতেও দ্বিধা বোধ করতনা – তারাই হা করে কু’রআন শুনত? যে সব লোকরা প্রথম দিকের মুসলমানদের ইসলাম গ্রহণ করার জন্য মারতে মারতে মেরেই ফেলত, তারাই যখন কু’রআন শুনত, তাদের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যেত। অনেকে থাকতে না পেরে কানে হাত দিয়ে পালিয়ে যেত এবং কিছুক্ষন পরে আবার ফেরত আসতো বাকিটা শোনার জন্য। কিভাবে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম ক্রিমিনালদেরও কু’রআন সম্পর্কে জানার এতো আগ্রহ ছিল, কিন্তু আমাদের – “মুসলমানদের” সেরকম আগ্রহ হয় না?
অনেকে এর উত্তর দেন – তারা কু’রআনের আরবি বুঝতো, যেটা আমরা বুঝিনা। এটা অবশ্যই একটা বড় কারন যে কু’রআনের প্রথম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর আরবি এতটাই শক্তিশালী, এতটাই অবাক করার মত এবং মানব রচিত যে কোন গ্রন্থ থেকে এতটাই ভিন্ন যে আরবরা কু’রআনের তিলায়াত শুনেই বুঝে যেত যে এই জিনিস মানুষের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব না, এটা নিশ্চয়ই জাদু। আজকে হলে আমরা বলতাম এটা নিশ্চয়ই এলিয়েনরা লিখেছে। কিন্তু আরেকটি বড় কারণ হল, তারা উচ্চ মর্গের আরবি ছাড়াও কু’রআনের যে প্রকৃত বাণী, আল্লাহ মানুষকে কি বলছেন, সেটা তারা তাদের মাতৃভাষায় শুনত এবং যার কারণে তারা খুব ভালোভাবে বুঝত আল্লাহ কি বলছেন। আল্লাহর অত্যন্ত শক্তিশালী কথা, হৃদয় বিদীর্ণকারী ভাষণ, অদ্ভুত সুন্দর সব বাক্য গঠন – এগুলো তারা তিলায়াত শুনেই বুঝে যেত। আমরা যারা কু’রআনের প্রচলিত বাংলা অনুবাদগুলো পড়ি, তারা এর কিছুই বুঝতে পারি না।
অনেকেই বলেন এর সমাধান হচ্ছে আরবি শিখে কু’রআন পড়া। কিন্তু আমি অনেককেই দেখেছি দুই বছর ধরে আরবি শিখছে, তাজয়িদ কোর্স করেই যাচ্ছে, কিন্তু এখনও কু’রআন আরবিতে পড়ে হয় তারা ঠিকমত বুঝতে পারে না, নাহয় কু’রআনের বাণী তাদের বুকের মধ্যে ধাক্কা দেয় না। বরং তাদেরকে যদি বাংলা বা ইংরেজিতে ভালো কোন ধর্মীয় বই দেওয়া হয়, সেটা তারা ঠিকই আগ্রহ নিয়ে পড়ে। সুতরাং এক/দুই বছর আরবি শিখলেই যে বাঙালিরা নিয়মিত কু’রআন পড়া শুরু করে এবং কু’রআন পড়তে গিয়ে একদম গভীর ভাবে ডুবে যায় সেটা সবসময় ঠিক না। এরকম ঘটনা আমি অন্তত এখনও দেখিনি। বরং যাদের কু’রআন শেখার চরম আগ্রহ আগে থেকেই এতবেশি ছিল যে তারা বছরের পর বছর ধরে আরবি শিখেছেন কু’রআনকে আরও ভালো ভাবে শেখার জন্য, তারাই আরবি শিখে কু’রআন পরে আরও বেশি উপকার পান।
আমার মতে আসল সমস্যা হচ্ছে কু’রআনের যথার্থ বাংলা অনুবাদ এখনও করা হয়নি। আব্দেল হালেম যেরকম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ইংরেজি অনুবাদ করে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে প্রাঞ্জল, আধুনিক ভাষায় কু’রআনের অনুবাদ করলে সেটা মানুষ গল্পের বইয়ের মত আগ্রহ নিয়ে দিনরাত কু’রআন পড়া শুরু করে, সেরকম কোন প্রাঞ্জল, প্রচলিত আধুনিক বাংলা ভাষায় অনুবাদ এখনও হয় নি। যার কারণে আমরা এখনও প্রায় সাধু ভাষায় লেখা মান্ধাত্তা আমলের বাংলা ভাষার অনুবাদ পড়ি, যার মধ্যে অর্ধেক শব্দই থাকে বাংলায় লেখা আরবি। সে সব অনুবাদ পড়ে ঘুমে আমাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসে। কু’রআনের আরবিতে যে আবেগ, তীব্রতা, মাধুর্য আছে সেটা বাংলা অনুবাদ পড়ে কিছু তো বোঝা যায়ই না, বরং বাপ-দাদার আমলের বাংলা ভাষা ব্যবহার করে এমন সব অনুবাদ করা হয়েছে যে পড়লে মনে হয় কালিদাশের শকুন্তলা পড়ছি।
বাংলা অনুবাদে কতখানি ভাব হারিয়ে যায় তার একটা উদাহরণ দেইঃ
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ (১৪:৭)
এর প্রচলিত বাংলা অনুবাদঃ
“যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব।”
অথচ, এই আয়াতটিতে যে পরিমাণের আবেগ, তীব্রতা আছে, আরবি শব্দগুলো যে ব্যকরনগত কাঠামোতে আছে, তা যদি আমরা তুলে ধরতে চাই, তবে এর যথার্থ বাংলা অনুবাদ হবেঃ
মনে পড়ে তোমাদের প্রভু বলেছিলেন, তোমরা যদি একবারও কৃতজ্ঞ হও, শুধুই একবার, তাহলে আমি তোমাদেরকে দিতেই থাকবো, দিতেই থাকবো, দিতেই থাকবো।
একবার চিন্তা করে দেখুন। এরকম একটি প্রাঞ্জল, আধুনিক বাংলা অনুবাদ পড়লে আপনার মনে কি ধরণের আবেগ তৈরি হয়, আর “যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব” – তখন কি ধরণের আবেগ তৈরি হয়। আকাশ পাতাল পার্থক্য। প্রচলিত বাংলা অনুবাদগুলো কু’রআনকে বাংলাদেশের সংবিধানের মত চরম বোরিং একটা বইয়ে পরিণত করেছে, যেটা হুমায়ূন আহমেদের গল্পের বইয়ের মত আগ্রহ নিয়ে পড়ার কোন কারণ আমি দেখিনা। বিশেষ করে এযুগের এটেনশন ডেফিসিয়েন্সিতে ভোগা নতুন প্রজন্মের মানুষদের কাছে, যারা সারা দিনে ১০ মিনিটও টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ম্যাগাজিন ইত্যাদি কোন বাহ্যিক উত্তেজনা ছাড়া চুপচাপ বসে কোন কিছু চিন্তা করার ধৈর্য পর্যন্ত রাখতে পারে না।
তাহলে আমরা কি করবো? বাংলা অনুবাদ পড়ে যদি আগ্রহ না পাই, আরবি শিখে কু’রআন পড়ে বাংলার মত বুঝতে যদি বছরের পর বছর লাগে, তাহলে আমাদের উপায় কি? আমি আপনাদেরকে দুটো জিনিস অনুরোধ করবো আজকে থেকেই শুরু করারঃ
১) নওমান আলি খানের কু’রআনের লেকচার গুলো শুনতে। ভয় পাবেন না, তার লেকচার অন্য সব লেকচারের মত না যে শোনার দশ মিনিটের মধ্যে আপনি নাক ডাকা শুরু করেবেন। আমার উপদেশ হবে প্রথমে সুরা তাকাছুর এবং তারপর বাকা’রাহ দিয়ে শুরু করতে। এই লেকচারগুলোর বৈশিষ্ট্য হল যে এগুলো শুধুই এক নাগাড়ে উচ্চ মর্গের কথাবার্তা না। বরং আমাদের প্রচলিত আধুনিক ভাষায়, আজকালকার ঘটনাগুলোর সাথে সঙ্গতি রেখে কিছু আলোচনা, যেখানে প্রতি দশ মিনিট পর পর কোন না কোন কৌতুক, মজার ঘটনা আছে যা আপনাকে হাসিয়ে ছাড়বেই। আপনি ফ্রিজ খুলে পেপসি না পেলে কি করেন, সেটাও যে আল্লাহ কু’রআনে বলে দিয়েছেন – এধরনের হাজারো নিত্যদিনের ঘটনা আপনি এই লেকচার গুলোতে পাবেন।
২) প্রফেসর আব্দেল হালেমের ইংরেজি অনুবাদ পড়তে। তিনি বিশ বছর ধরে এই অনুবাদটি তৈরি করেছেন এবং তাঁকে আরবিতে এযুগের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পণ্ডিত বলে মানা হয়। এই অনুবাদটি কু’রআনের আরবিকে সবচেয়ে ভালোভাবে আধুনিক ইংরেজিতে তুলে ধরেছে বলে সর্বজন স্বীকৃত। তার অনুবাদ পড়লে আপনার মনে হবে না আপনি কু’রআন পড়ছেন, বরং মনে হবে কোন আধুনিক সাহিত্য পড়ছেন।
দুঃখজনক ভাবে কোন বাংলা অনুবাদ বা তাফসির আপনাদেরকে দিতে পারলাম না। যদি পাঠকদের কেউ কোন ভালো বাংলা অনুবাদ, লেকচার পেয়ে থাকেন যা এই দুটির ধারে কাছেও যায়, তাহলে কমেন্টে লিখে দিন।
সুন্দর পোস্ট!
সমস্যা হচ্ছে, আমাদের যারা ক্বোরআনের অলংকারতত্ত্ব সম্পর্কে বিজ্ঞ, তাঁরা বাংলার ঐ অলংকারগুলো সম্পর্কে ততটাই অজ্ঞ। আর, আমরা যারা বাংলার অলংকার নিয়ে গর্বিত, ক্বোরআনের আলঙ্করিক সৌন্দর্য্য আমাদের কাছে সুদূর পরাহত। এই দুটোর মেলবন্ধন যেদিন হবে, সেদিন বোধহয় আপনার স্বপ্নটা আশার আলো দেখবে।
হাবিবুর রহমান সাহেব একটা অনুবাদের চেষ্টা করেছিলেন, ওটাকে আমি “চেষ্টা” বলতে কার্পণ্য করি না, কারণ ওটা দিয়ে ক্বোরআনকে উনি মেরে দিয়েছেন, অনেক জায়গায় অর্থগত বিপর্যয় সৃষ্টি করে গেছেন।
আমি আশরাফ আলী থানভী’র করা অনুবাদের একটা বাংলা লাইন-বাই-লাইন অনুবাদ মোটামুটি প্রাঞ্জল পেয়েছি (বাংলা অনুবাদকের নাম ভুলে গেছি), যেখানে পাশে প্রয়োজনীয় টীকা রয়েছে, ওটা বেশ প্রাঞ্জল আর অর্থবহ। আমি তেলাওয়াত করে, ওখানে সাথে সাথে অর্থটা দেখে নেয়ার সুযোগ পাই।
আপনার পোস্টের জন্য আপনাকে অনেক অনেক অনে-ক ধন্যবাদ।
ক্বোর’আন আমাদের কাছে আনন্দময় হোক, ঈশ্বর করুন। আমীন।
সুন্দর পোস্ট। আমি একটি কোরানের বাংলা অনুবাদ দেখেছি, ভালো লেগেছে। অনুবাদক- এ কে এম আশরাফুল ইসলাম। সেখানে কিছু টিকা-টিপ্পনী আছে। কোরানটি বিশ্ব সাহিত্য ভবন, ৩৮/৪ বাংলা বাজার থেকে প্রকাশিত।
আমি না জেনে কারও সম্পর্কে খারাপ কিছু বলতে চাই না কিন্তু আমার বেশিরভাগ বাংলা অনুবাদের টিকা টিপ্পনি পড়ে দেখেছি সেখানে অনেক তথ্য আছে যেগুলোর কোন সঠিক ভিত্তি নেই এবং অনেক হাদিসের উল্লেখ আছে যেগুলো জাল হাদিস। বেশিরভাগ অনুবাদক হাদিস উল্লেখ করার সময় বলে দেন না সেটা সহিহ, না দায়িফ, না মাওদু, না হাসান। যার ফলে আমরা না জেনে প্রচুর জাল হাদিস এবং মনগড়া তাফসির পড়ে ব্যপক বিভ্রান্ত হয়ে গেছি।
আব্দেল হালিম সেদিক থেকে সবচেয়ে ভালো। তিনি আল্লাহর বাণীকে আল্লাহর বাণী দিয়েই ব্যাখ্যা করেছেন।
Kubei vlo article. Vi apni jodi kta uddog niten tahole to sob chea valo hoto. Abdel Halem er english tanslation the banglai. tahole amra bangalira onek upokrito hotam. Ami mon theke asha korchi apni eai uddog ta niben insaallah.
কোরআন নিয়ে আপনার উদ্দ্যোগ প্রশংসনীয়।
ইষ্ট লন্ডন মসজিদের সম্মানিত খতীব শায়খ আবদুল কাইউম সাহেবের ৪০ টির বেশী বাংলা তাফসির এর ইউটিউব ভিডিও আছে। http://minarmedia.co.uk/tafsir.htm – এই লিংকে। আমার ভালো লেগেছে। কিছুদিন আগে নেটে ঘুরতে ঘুরতে http://archive.org/details/QuranBanglaTafsir এই লিংকটিতে কিছু অডিও তাফসিরও পেয়ে যাই।
আল্লাহ আমাদের ইংরেজী ভালো বুঝতে পারার ক্ষমতা দিন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে জ্ঞানের মধ্যদিয়ে বড় করুন।
Ya , they are great. Mohir Ali’ Meaning of the Quran word by word is also best in this regard. I suggest also Shaikh Abdun Nasir Jangda’s Tafseer also.
Here I wrote about Ustad Nouman Ali Khan and Shaikh Abdun Nasir Jangda.
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/bloglist/7762/alsabanow13
http://www.linguisticmiracle.com/tafsir